ভারতের সেভেন সিস্টার এবং বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব
ভারতের সেভেন সিস্টার এবং বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব - ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ। বাংলাদেশ স্থলসীমানায় উত্তর, পশ্চিম ও পূর্ব দিকে ভারত এবং পূর্ব-দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার দিয়ে বেষ্টিত। বাংলাদেশের সাথে ভারতের স্থলসীমানা চার হাজার ১৫৬ কিলোমিটার। অপর দিকে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের স্থলসীমানা ২৭০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ভারতের মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ এ পাঁচটি রাজ্য দিয়ে বেষ্টিত। বাংলাদেশের সাথে এ পাঁচটি রাজ্যের স্থলসীমানা যথাক্রমে- ১৮০ কিলোমিটার, ৮৫৬ কিলোমিটার, ৪৪৩ কিলোমিটার, ২৬২ কিলোমিটার ও ২২১৭ কিলোমিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে স্থিত মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের সাথে বাংলাদেশের স্থলসীমানা ২৭০ কিলোমিটার। বাংলাদেশের দক্ষিণ দিক বঙ্গোপসাগর দ্বারা উন্মুক্ত। বাংলাদেশের দক্ষিণ দিকের তটরেখা ৫৮০ কিলোমিটার।
ভারতের পূর্বাঞ্চলের আসাম, মনিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড এ সাতটি রাজ্যকে সেভেন সিস্টার্স বলা হয়। এ সাতটি রাজ্য চতুর্দিক অপর রাষ্ট্রের স্থলভাগ দিয়ে বেষ্টিত হওয়ায় চিকেন নেক করিডোর নামক দৈর্ঘ্যে ৬০ কিলোমিটার ও প্রস্থে ২১ থেকে ৪০ কিলোমিটার একটি সরু পথ দিয়ে ভারতের মূল ভূ-খণ্ডের সাথে এ রাজ্যগুলো যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এ পথ দিয়ে যোগাযোগ সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। চিকেন নেক করিডোরটি শিলিগুড়ি করিডোর নামেও অভিহিত। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিকে অবস্থিত। করিডোরটির একপ্রান্তে বাংলাদেশ এবং অপর প্রান্তে নেপাল ও ভুটান এবং ভারত কর্তৃক পরবর্তীতে অঙ্গীভূত সিকিম। ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এ সাতটি রাজ্যের সাথে সড়ক, রেল ও নৌপথে ট্রানজিট স্থাপনে আগ্রহী। নৌপথে ট্রানজিটটি চালু থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় নদীর নাব্য স্বল্প হওয়ার কারণে তা বছরব্যাপী ফলদায়ক নয়। অপর দিকে সড়ক ও রেলপথে ট্রানজিট দিতে গেলে যে অবকাঠামোর প্রয়োজন তা বাংলাদেশে এখনো পরিপূর্ণভাবে গড়ে না উঠলেও চট্টগ্রামের সমুদ্রবন্দরে মালামাল জাহাজ থেকে খালাস পরবর্তী ট্রানিজিটের মাধ্যমে পরিবহন সীমিত পরিসরে শুরু হয়েছে। ট্রানজিটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর এবং সড়ক, রেল ও নৌপথ ব্যবহারে বাংলাদেশের অবকাঠামো ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের তুলনায় ভারতের পক্ষ থেকে ট্রানজিট সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান মাশুল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় অপ্রতুল হলেও ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থ পরিপূর্ণভাবে চরিতার্থ হচ্ছে- এমনটিই গবেষকদের অভিমত।
সেভেন সিস্টার্সখ্যাত সাতটি পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের মধ্যে নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয় ও অরুণাচল এ চারটি খ্রিষ্টান অধ্যুষিত। এ চারটিতে খ্রিষ্টান জনসংখ্যার পরিমাণ যথাক্রমে- ৮৭.৯৩, ৮৭.১৬, ৭৫.৫৯ এবং ৩০.২৬ শতাংশ। এ চারটি রাজ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে মিজোরাম ব্যতীত অপর তিনটিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দ্বিতীয় অবস্থানে। মিজোরামে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অবস্থান দ্বিতীয় এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবস্থান তৃতীয়। অবশিষ্ট তিনটি রাজ্য আসাম, ত্রিপুরা ও মনিপুর হিন্দু অধ্যুষিত। এ তিনটি রাজ্যে হিন্দু জনসংখ্যার পরিমাণ যথাক্রমে ৬১.৪৭, ৮৩.৪০ ও ৪১.৩৯ শতাংশ। এ তিনটি রাজ্যের মধ্যে আসাম ও ত্রিপুরায় ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা দ্বিতীয় অবস্থানে। অপর দিকে মনিপুরে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা দ্বিতীয় অবস্থানে।
সিকিম স্থলবেষ্টিত হিমালয় পাদদেশের একটি রাজ্য। এর পশ্চিমে নেপাল, উত্তরে চীনের তিব্বত, পূর্বে ভুটান এবং দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। সর্বশেষ ২০১১ এ অনুষ্ঠিত আদমশুমারি অনুযায়ী সিকিমের লোকসংখ্যা ছয় লাখ ১১ হাজারের কাছাকাছি। সিকিম গোয়া এরপর ভারতের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য। পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্গা সিকিম নেপাল সীমানায় অবস্থিত। সিকিমের আয়তন সাত হাজার ৯৬ কিলোমিটার বা দুই হাজার ৭৪০ বর্গমাইল। এটি ভারতের সবচেয়ে কম জনবসতিপূর্ণ রাজ্য।
ব্রিটিশদের কাছ থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লাভ পরবর্তী জওয়াহের লাল নেহরু ভারতের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন গণভোটের মাধ্যমে সিকিমকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ হয়। কিন্তু নেহরুর শাসনামল থেকেই সিকিম ভারতের বিশেষ আশ্রিত রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হতে থাকে এবং এর প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ ভারত নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। ভারতের সাথে চীনের সিকিমস্থ নাথুলা পাশ দিয়ে একমাত্র স্থল যোগাযোগ ছিল। ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর এ পাশটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল যা পরবর্তীতে ২০০৬ সালে খুলে দেয়া হয়।
নামগিয়েল রাজবংশের শেষ রাজা চগিয়াল পান্ডেল থন্ডুপ নামগিয়েল ১৯৬৫ সালে সিংহাসন আরোহণ করেন। রাজার আমেরিকান স্ত্রী হুপ কুক সিকিমের সাবেক সম্পদের প্রত্যাবর্তন বিষয়ক নিবন্ধ লিখলে ভারত চরমভাবে অসন্তুষ্ট হয়। ১৯৭৪ সালে সিকিমে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে ৩২ আসনের পার্লামেন্টে লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বাধীন সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস (এসএনসি) ৩১টি আসনে জয়ী হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে সরকার গঠন করে। সরকার গঠন পরবর্তী সিকিমকে ভারতভুক্ত করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ২৭ মার্চ লেন্দুপ দর্জির মন্ত্রিসভা সিকিমের রাজতন্ত্র বিলোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অতঃপর সিদ্ধান্তটি পার্লামেন্টে অনুমোদন পরবর্তী চার দিনের মাথায় সাজানো ও পাতানো গণভোটের আয়োজন করে বলপ্রয়োগে সিকিমকে ভারতভুক্ত করা হয়।
মিয়ানমারের বর্তমান রাখাইন প্রদেশের সাবেক নাম আরাকান। একদা আরাকান একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র ছিল। এখন এটি মিয়ানমারের একটি প্রদেশ। আরাকান নাফ নদী দিয়ে বাংলাদেশ থেকে এবং মূল ভূ-খণ্ড মিয়ানমার থেকে পাহাড় দিয়ে বিচ্ছিন্ন। অতীতে ২০ হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে আরাকান বিস্তৃত ছিল। পরবর্তীতে আরাকান পার্বত্য জেলা এবং দক্ষিণের বেশির ভাগ অঞ্চল আরাকান থেকে পৃথক করায় বর্তমানে আরাকানের আয়তন ১৪ হাজার ২০০ বর্গমাইল। বেসরকারি হিসাব মতে, আরাকানের লোকসংখ্যা ৫০ লক্ষাধিক এবং বর্তমানে প্রদেশটিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন এবং ইসলাম ধর্মাবলম্বী মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। এ প্রদেশটিতে রাখাইন ও রোহিঙ্গা ছাড়াও প্রায় দু’লক্ষাধিক চাকমা, কামাইস ও বার্মান নাগরিক রয়েছে। মিয়ানমারের ১৪টি প্রদেশের মধ্যে একমাত্র আরাকানই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ ছিল। মিয়ানমারের ৭০ লাখ মুসলমানের অর্ধেকের বেশি আরাকানের অধিবাসী। ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে আরাকান স্বাধীন রাজ্য হিসেবে হিন্দু, মুসলিম ও বৌদ্ধ শাসকদের হাতে শাসিত হয়েছে।
মিয়ানমারে সে দেশের সরকার স্বীকৃত ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এ জাতিগোষ্ঠীগুলো আটটি প্রধান জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এ আটটি জাতিগোষ্ঠী- বামার, চীন, কাচিন, কাইন, কায়া, মন, আরাকানিজ ও শান। এ জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বামার জনসংখ্যার পরিমাণ ৬৫ শতাংশ। এরা সবাই কট্টর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চীন ৭.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এ বিনিয়োগকৃত অর্থ দিয়ে সেখানে গভীর সমুদ্রবন্দরসহ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কুনমিং অবধি সড়ক যোগাযোগ নির্মাণাধীন।
বর্তমানে কায়োকফু বন্দর থেকে চীনের কুনমিং অবধি চীনের নির্মিত তেল ও গ্যাসের পাইপলাইন মধ্যপ্রাচ্য থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে চীনে তেল ও গ্যাস পরিবহন সহজতর করেছে। পাইপলাইনটি রাখাইন রাজ্যের বঙ্গোপসাগর উপকূল থেকে চীনের কুনমিং অবধি দৈর্ঘ্যে ৭৭১ কিলোমিটার। কায়োকফুতে স্থিত রোহিঙ্গাদের ২০১২ সাল থেকে জোরপূর্বক বিতাড়ন শুরু হয় এবং এই বিতাড়নের মূল উদ্দেশ্য ছিল কায়োকফু বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাস্তবায়ন।
রাখাইন উপকূলে সওই গ্যাস ক্ষেত্র থেকে মিয়ানমার প্রতিদিন ৪০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট গ্যাস উত্তোলন করছে যার মধ্য থেকে ৩৭৯ মিলিয়ন কিউবিক ফুট চীনে রফতানি করা হচ্ছে। রাখাইন উপকূলে মিয়ানমারের ৩৭টি তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র রয়েছে। এগুলোতে যে পরিমাণ তেল ও গ্যাস রয়েছে তা উত্তোলন করা গেলে রাখাইনসহ সমগ্র মিয়ানমারের জনমানুষের প্রভূত উন্নতি সাধিত হবে।
ভারতের সহায়তায় রাখাইনে কালাদান বহুমুখী ট্রানজিট-ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নাধীন যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্সখ্যাত রাজ্যসমূহকে রাখাইন রাজ্যের মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত করবে। ভারতের সহায়তায় কালাদান প্রকল্পভুক্ত সিত্তিবন্দর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে চীন ও ভারতের যে বিনিয়োগ এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো দক্ষিণ চীনের কুনমিং প্রদেশকে মালাক্কা প্রণালীর ব্যবহার ব্যতিরেকে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্সখ্যাত সাতটি রাজ্যকে বঙ্গোপসাগরের সাথে রাখাইনের মাধ্যমে যুক্ত করা যাতে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও দূরত্ব উভয় বিবেচনায় সাশ্রয়ী হয়।
রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন পরবর্তী সমগ্র বিশ্ব মিয়ানমারের এ কাজটিকে নিন্দা করলেও চীন ও ভারত তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা চিন্তা করে বিতাড়নের কাজটিকে সমর্থন করে। চীনের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। ভারত বাংলাদেশকে বন্ধুপ্রতিম হিসেবে দাবি করলেও দেশটির কার্যকলাপে তা প্রতিফলিত হয় না। বর্তমানে চীন ও ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে হলেও সে তুলনায় বাংলাদেশের রফতানি আশাব্যঞ্জক নয়। বাংলাদেশের রফতানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রভৃতির কথা বিবেচনায় নিলে এর উল্টো চিত্রটি পরিলক্ষিত হয়।
রাখাইনে গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অপরাপর উন্নয়নমূলক কাজ চীনের প্রস্তাবিত ৭.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে সেখানে চীনের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে বিশ্বের অপরাপর পরাশক্তি বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকার বিঘ্নিত হবে। এ বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে তার প্রবেশাধিকার ও আধিপত্য অক্ষুণ্ন রাখার জন্য বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার বৃদ্ধিতে বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আকর্ষণীয় বিনিয়োগ প্রস্তাব বাস্তবায়নাধীন ও বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।
বাংলাদেশের সাথে চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্কের বিষয়ে বাংলাদেশের সর্বাগ্রে বিবেচ্য দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থ। বাংলাদেশ কোনো পরাশক্তির রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থে যেন উপলক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে দেশটির সরকার ও জনগণকে সদাসর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। এ বিষয়ে যেকোনো ভুল সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য চরম বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে। সুতরাং বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বকে কাজে লাগিয়ে দেশটির প্রতিটি সিদ্ধান্ত যেন নিজ দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের সহায়ক হয় তা হিসাব করেই দেশটিকে সম্মুখপানে অগ্রসর হতে হবে।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com