ভারতের জমি চীনের হাতে তুলে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদি সরকার, শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে এমনই অভিযোগ করলেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান এমপি রাহুল গান্ধী। তার তোপ যে সরাসরি ভারত সরকার তথা নরেন্দ্র মোদির দিকেই, তা আরো একবার শুক্রবার স্পষ্ট করেন রাহুল। তার প্রশ্ন, ‘‘এত দিন ফিঙ্গার ৪-এ ভারতীয় সেনা থাকত। কিন্তু রাজনাথ সিংহ বলেছেন, এ বার ভারতীয় সেনা সরে এসে ফিঙ্গার ৩-এ ঘাঁটি তৈরি করবে। কেন চীনকে ভারতীয় ভূখণ্ড এ ভাবে ছেড়ে দিচ্ছে মোদি সরকার?’’

প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বৃহস্পতিবার সংসদে বলেন, ভারত ও চীন সেনা সরানোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। কিন্তু কংগ্রেস মনে করছে, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নামে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে কেন্দ্র। আর সেই নিয়েই তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা থেকে রাহুল গাঁধী সকলেই।

এ দিকে সেনা সূত্রে খবর, প্যাংগং হ্রদ এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সরানোর পর এ বার ভারতের নজরে রয়েছে দেপসাং এলাকা।ীচিনের সঙ্গে পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনায় দেপসাং থেকেও সেনা বাহিনী সরানোর বিষয়টি তুলতে পারে ভারত।

ভারতীয় পার্লামেন্টে রাজনাথ সিংয়ের বক্তৃতার প্রেক্ষাপটে কংগ্রেসের তরফ থেকে একাধিক প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এই সূত্রেই ৮ প্রশ্নের একটি তালিকা কেন্দ্রের দিকে ছুড়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। প্রথমেই তার প্রশ্ন, ‘‘সীমান্তে এপ্রিল ২০২০-এর আগের স্থিতাবস্থা ফিরবে কি না, তা স্পষ্ট করেননি রাজনাথ সিং। কেন কেন্দ্রীয় সরকার লাদাখ সীমান্তে আংশিক সেনা প্রত্যাহারের দাবি মেনে নিচ্ছেন? কেন তারা চীনের সামনে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের দাবি করছেন না?’’

রাহুল গান্ধী যে কথা বলেছেন, সেই মর্মেই ভারতীয় ভূখণ্ডের অধিকার চীনের হাতে তুলে দেয়ার অভিযোগ করেছেন সুরজেওয়ালাও। তিনি বলেছেন, ‘‘প্যাংগং হ্রদ এলাকায় ফিঙ্গার ৪-এ ছিল ভারতীয় সেনা বাহিনী। ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত টহল দিতে পারত। রাজনাথ সিং বলেছেন, এ বার ভারত সেনা পিছিয়ে আসবে ফিঙ্গার ৩-এ। কেন পূর্ববর্তী অবস্থানকে বাফার জোন করা হলো? ভারতীয় ভূখণ্ড কেন তুলে দেয়া হলো চীনের হাতে?’’

এমনই বিস্তারিত ৮ প্রশ্নে ভারত সরকারের সমালোচনা করছে কংগ্রেস, তখনই সেনা বাহিনীর সূত্রে খবর, প্যাংগং হ্রদের সীমানা থেকে সেনা সরানোয় ঐকমত্যে পৌঁছনোর পর এ বার ভারত চাইছে দেপসাং এলাকা নিয়ে কথা তুলতে। রাজনাথ সিং জানিয়েছিলেন, এরপরও দু’দেশের মধ্যে কমান্ডার স্তরের কথা চলবে। ওই বৈঠকেই এই বিষয়টি উঠতে পারে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করে এলাকার ঘোষণা না করলেও মনে করা হচ্ছে, চীন ভারতের আলোচনায় উঠে আসতে পারে দেমচক সেক্টর, চারডিং নিঙ্গলাং নালাহসহ বেশ কয়েকটি এলাকার কথা।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা