দায়ী কে : মাথাথির না অন্য কেউ?
মাথাথির - ছবি সংগৃহীত
মালয়েশিয়ার ভিশন-২০২০, ‘ওয়াওয়াসান ডুয়াকুলো ডুয়াকুলো’ নামে পরিচিত। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালে ষষ্ঠ পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় উন্নয়ন পরিকল্পনাবিদদের নিয়ে ২০২০ সালের মধ্যে নিরাপদ, মুক্ত স্বাধীন জীবন, সর্বোপরি উন্নত মালয়েশিয়া গড়ার এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন যা মালয়েশিয়াকে উন্নত দেশে পরিণত করার কথা।
ভিশন-২০২০ মূলত ৯টি কৌশলগত নিয়ামক বা চ্যালেঞ্জ যেগুলো উত্তীর্ণ হলে মালয়েশিয়া উন্নত দেশে পরিণত হবে। এগুলো অর্জনের জন্য দশম মালয়েশিয়া পরিকল্পনার মাস্টার প্লান হিসেবে ২০১১-১৫ সালেও বিস্তারিত কর্মসূচি গৃহীত হয়েছিল। অনেকেই বলেছেন, এ পরিকল্পনা বেশ সাহসী ও উচ্চাভিলাষী। এ জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। মালয়েশিয়ার দরকার গ্রস ন্যাশনাল ইনকাম বা জিএনআই, মাথাপিছু আয় ১৫ হাজার ডলার, যা অর্জিত হলে বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব মতে, ওই দেশ উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবে। কিন্তু এটা মাথাপিছু ২০১৯ সালের ১১.১৯ ডলার থেকে ২০২০ সালে ১০.১৯ ডলারে নেমে আসে। ফলে টার্গেটপূরণ অনেক দূরে চলে যায়। অর্থনৈতিক সূচকগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২৫ সালেও মালয়েশিয়া উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে পারছে না।
শিল্পায়ন ছাড়াও ভিশন-২০২০ তে সামাজিক মূল্যবোধের বিষয় জড়িত রয়েছে। যেমন পক্ষপাতহীন, সুন্দর, সহনশীল ও আরো বেশি গণতান্ত্রিক সমাজ ও প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি গঠন। মালয় রাজনীতিবিদরা বলছেন, উন্নত দেশ গঠনের জন্য ওয়াওয়াসান কর্মসূচিকে সার্থক করতে হলে বর্তমান অর্থনীতি ‘রিফর্ম’ করতে হবে; মালয়েশিয়ায় গণতন্ত্রের অবাধ চর্চা নিয়ে কিছুটা সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলেন, ক্ষমতার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে এবং সরকার রাজনৈতিক দুর্নীতি প্রচার না করার জন্য মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে; নৃতাত্ত্বি¡ক বিভেদ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও সমালোচকরা মনে করেন। জরিপে দেখা যায়, নৃতাত্ত্বিক মালয়দের আয় সবচেয়ে বেশি। এরপর রয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা এবং সবচেয়ে নিচে চীনা বংশোদ্ভূতরা। কিন্তু ডা. মাহাথিরের মতে, ওয়াওয়াসান ডুয়াকুলো ডুয়াকুলো সফল হলে দেশে নৃতাত্ত্বিক কোনো বিভেদ থাকবে না। তখন সবাই মালয়েশিয়ার নাগরিক হিসেবে সমান সুযোগ-সুবিধা পাবে।
অর্থনীতির অধঃগতি, রাজনৈতিক দুর্নীতি, সামাজিক অস্থিরতা অভীষ্ঠ কর্মসূচি লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাগড়া দিয়েছে। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় মাহাথির ৯টি প্রয়োজনকে চিহ্নিত করেছিলেন। এগুলো হলো- নৃতাত্ত্বিক ঐক্য, মানসিক মুক্তি ও নিরাপত্তা, যথাযথ গণতান্ত্রিক চর্চা, বৈজ্ঞানিক অগ্রসরতা, পরিবারকেন্দ্রিক কল্যাণ সংগঠন, যথাযথ ও সঠিক পরিবৃদ্ধি, সমৃদ্ধ অর্থনীতি, ইলেকট্রনিক অগ্রগতি, সবকিছু ডিজিটালে রূপান্তরকরণ ইত্যাদি। এসব চিহ্নিত লক্ষ্যকে পর্যালোচনা করলে তিন ধরনের কার্যক্রমে ভাগ করা যায়। যেমন- অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড।
সমৃদ্ধ মালয়েশিয়া গঠনের জন্য মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৯০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রতি দশকে প্রকৃত জিডিপি দ্বিগুণ করার কথা বলেছেন। তাহলে ২০২০ সালে জিডিপি টার্গেট ৩৫২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে। কিন্তু ২০০৮ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কটের অক্টোপাস মালয়েশিয়াকেও আঁকড়ে ধরে। তখন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ঘোষণা দেন, দেশকে বার্ষিক জিডিপি হার ৮ শতাংশে উন্নীত করতে হবে যদি ২০২০ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে যেতে হয়। অথচ এরপর জিডিপির হার ৬ শতাংশে নেমে দাঁড়ায় যা ২০১০-১৫ সালে গড়পরতা হিসাবে ৫.৬ শতাংশ। এই অবস্থায় নাজিব মত প্রকাশ করেন, উন্নত দেশের সারিতে দাঁড়াতে হলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর একটি কারণ কমোডিটি প্রাইস কমে যাওয়া। ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ার শীর্ষ রফতানি পণ্য হলো ইনটিগ্রেটেড সার্কিট ৪০.৭ বিলিয়ন ডলার, পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম ২৫ বিলিয়ন ডলার, পেট্রোলিয়াম গ্যাস ২২ বিলিয়ন ডলার, পাম তেল ১৩ বিলিয়ন ডলার। মোট রফতানি রাজস্বে পেট্রোলিয়াম ও পাম তেল ৩০ শতাংশ দাঁড়ায়। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের মতে, মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভবিষ্যত নির্ভর করে সরকারের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, তেলের মূল্য নির্ধারণ ও রফতানি কৌশলের ওপর। সরকারের খরচ কমানোর ফলে পরবর্তী বছরে প্রায় তিন বিলিয়ন সাশ্রয় হয়েছিল।
মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক পলিসি রিফর্মের বিষয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনাও রয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পলিসি মালয় বা ভূমিপুত্রদের অনুকূলে, যারা মালয়েশিয়ার জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ। নতুন অর্থনৈতিক পলিসি ভূমিপুত্রদের জীবনযাপন পদ্ধতির আরো উন্নয়ন সাধনের জন্য ১৯৭১ সালে প্রণীত হয়। তখন চীনা মালয়েশিয়ানরা উন্নত লিভিং স্ট্যান্ডার্ড ভোগ করত। নতুন পলিসির কারণে মালয়দের আয় অনেকাংশে বেড়ে যায়, তাদের ঘিরেই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আবর্তিত হতে থাকে। তখন নানা দিকে রব উঠে যে, সরকার পক্ষপাতিত্ব করছে যা কোনো কল্যাণরাষ্ট্রের কাম্য নয়। এভাবে নানা দিক থেকে নতুন নীতির ওপর সমালোচনার চাপ পড়তে থাকে।
অর্থনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ ইয়েহ কিম লেং উচ্ছ্বসিত হয়ে জানান, মালয়েশিয়া অভীষ্ঠ লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে। তিনি আরো বলেন, উন্নয়নের আরো সব নিয়ামকগুলোর যথাযথ সমন্বয় হয়নি যা একটি উন্নত দেশ গঠনে প্রয়োজন ছিল। লেং যুক্তি দেখান, ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয় ১১ হাজার ডলারে দাঁড়ায়। ‘উচ্চ আয়ের মর্যাদাসম্পন্ন’ দেশ হওয়ার জন্য মাত্র আরো এক হাজার ৫০০ ডলার কম ছিল। তবে উচ্চ আয়ের মর্যাদার সাথে ‘আধুনিক উন্নত টেকনোলজি’ ও ‘উন্নত জীবনযাপন পদ্ধতি’ দরকার। এগুলো মালয়েশিয়া এখনো অর্জন করতে পারেনি। লেং আরো মনে করেন, মালয়েশিয়ার সমাজ ‘চিড়ধরা’, এখান থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে। মাহাথিরের ব্রেইনচাইল্ড ওয়াওয়াসানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সমন্বয় করা হয়েছে। ড. মাইকেল জয়কুমার দেবরাজ বলেছেন, মালয়েশিয়ায় জিডিপি বেড়েছে।
১৯৯০ সালে ছিল ১০০ বিলিয়ন রিঙ্গিত, ২০২০ সালে ১.৩ ট্রিলিয়ন রিঙ্গিতে উঠেছে যা প্রশংসনীয়। তবে অর্থনৈতিক সমতা মালয়েশিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক দরিদ্র লোক রয়েছে এবং মানুষের ঋণ বেড়ে যাচ্ছে।’ তিনি মনে করিয়ে দেন, একজন গ্র্যাজুয়েট মাসে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার রিঙ্গিত পেয়ে থাকেন; অনেকে আরো কম বেতনে চাকরি করতে বাধ্য হন। তিনি আরো বলেন, অনেক মালয়েশিয়ান বাড়িঘরের মালিক হয়েছেন কিন্তু রিয়েল এস্টেট খাতে ভূমি ও বাড়ির দাম বেড়ে গেছে যা ঠিক নয়। এতে কম আয়ের বিস্তর মালয়েশিয়ান সমস্যার সম্মুখীন হবে। দেবরাজ বলেন, মালয়েশিয়ার চিত্তাকর্ষক হাইওয়ে ও পেট্রোনাসের মতো দালানকোঠা বাইরে থেকে দেখতে সুন্দর দেখালেও সমাজজীবন এত সুখের নয়। জাতিগত বিভেদ রয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিকরা দায়ী বলে দেবরাজ মনে করেন।
ভিশন-২০২০ মতে, লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য যে ধরনের গ্র্যাজুয়েট তৈরির কথা, সেরকম গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে শিক্ষানীতি ব্যর্থ হয়েছে। তাই শিক্ষানীতিকে ‘ওভারহল’ করার কথাও অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বলছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডা. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, তার পরিকল্পনা ও পলিসিতে পরিবর্তন আনায় ভিশন-২০২০ অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। ‘পাকাতান হারাপান’ প্রশাসন ভেঙে পড়ার সময় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। ‘আমি যখন ইস্তফা দেই তখন উন্নয়নের ফোকাস ছিল ভিন্ন, পলিসিগুলোও ভিন্নতর। এসব পরিবর্তন করায় লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব হয়নি। আমার ইস্তফার পর পরিবর্তিত পলিসিগুলো একেবারে ভিন্ন ছিল।’ তিনি জানান, ‘লক্ষ্যে পৌঁছাতে না পারলেও শিল্পোন্নয়ন ও স্বনির্ভরতায় যা অর্জিত হয়েছে তাও কম নয়।’
তিনি মিডিয়ায় বলেছেন, ‘নাজিব রাজাকের ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি ভিশন-২০২০ কে আহত করেছে। নাজিব যদি উন্নয়নের মূল বিষয়গুলোতে হাত দিতেন এবং জনগণের কল্যাণকর বিষয়গুলো দেখভাল করতেন তাহলে পাকাতান হারাপান ১৪তম সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হতো না।’
লক্ষ্য ঘোষণার তিন দশক অতিক্রান্ত হলেও ওয়াওয়াসান ডুয়াকুলো ডুয়াকুলো পাইপলাইনে রয়ে গেছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এখন দেশের শিল্পোন্নয়নের জন্য পলিসি রিভিউ ও কৌশল নির্ধারণ করা দরকার। উন্নয়নের মহাসড়কে দাঁড়াতে গিয়ে মালয়েশিয়া প্রচণ্ড দুর্নীতির গহ্বরে পতিত হয়েছে। অবাধ দুর্নীতি থাকলে কখনো কোনো দেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে পারে না। তদুপরি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুঁজিবাজারে অস্থিরতার প্রভাব ফেলেছে। কোভিড-১৯-এর আক্রমণে গত বছর মালয়েশিয়ার পর্যটন খাতে ২৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। দুটি পাঁচতারা হোটেল বন্ধ হয়েছে কয়েকমাস আগে। আগামী মার্চে আরো একটি বন্ধ হচ্ছে। পর্যটন খাতকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হলেও দিন দিন তার অধঃগতি হচ্ছে। এ অবস্থায় অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতেই সরকার গলদঘর্ম হয়ে যাবে। তদুপরি ২০১৮ সালে বায়োফুয়েল পরিবেশ নীতির কথা তুলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল কেনা স্থগিত করেছে। একই সাথে, কাশ্মির নিয়ে মন্তব্য করার কারণে ভারতও পাম আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
মালয়েশিয়ার সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা মনে করেন, উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য দেশের পরিকল্পনাগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে এবং ভূলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেং বলেন, ক্রয়ক্ষমতায় সমতা, পিপিপি, ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এশিয়ার আরো দুটি দেশ সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ কোরিয়া মালয়েশিয়াকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছুু আয় ১৯৮০ সালে ১৭.২ শতাংশ হলেও ২০২০ সালে ৭০.২ শতাংশে দাঁড়ায়।
সিঙ্গাপুর আরো ভালো করেছে; সে ১৫১.৬ শতাংশে দাঁড়ায়। অর্থনীতিবিদরা বলেন, মালয়েশিয়া কেন ভালো করেনি, এর জুতসই কারণ আর্থিক ও রাজনৈতিক দুর্নীতি। ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর এডুকেশন ইন ইসলামিক ফিন্যান্সের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আরিফ জানান, ভিশন-২০২০ একটি ম্যারাথন; রাজনীতিবিদরা এটাকে টেনে ¯িপ্রন্ট বানিয়েছেন, অর্থনীতিকে খুব দ্রুত বাড়ানোর চেষ্টা করে শেষপ্রান্তে যেতে চেয়েছেন। অর্থনীতি ইঞ্জিনের মতো ‘ওভার ড্রাইভ’ করলে ‘ওভার হিট’ হয়ে যায়। তার মতে, ‘ইম্পোর্টেড লেবার ও ক্যাপিট্যালের’ কারণে ১৯৯০ দশকে মালয়েশিয়ায় ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। তিনি ডিজিটালাইজেশন ও শিল্পোন্নয়নের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
মিসেস টুঙ্কু মুনাব্বারা পুত্রা, মালয়েশিয়া প্যারেন্ট অ্যাকশান গ্রুপ ফর এডুকেশনের সেক্রেটারি। তিনি জানান, ‘ট্রাস্ট স্কুল কর্মসূচি’ এবং ‘দ্বিভাষিক শিক্ষাদান’ উপকারী হয়েছে, তবে ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধা কম। ছাত্রদের যোগ্যতা বাড়াতে শিক্ষকরা ব্যর্থ হয়েছেন আর সরকার রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়নি। এসব কিছু ওয়াওয়াসান ডুয়াকুলো ডুয়াকুলোকে অভীষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত করেছে। ‘আমরা এখনো মধ্য আয়ের ফাঁদে আবদ্ধ হয়ে আছি। আমাদের গ্র্যাজুয়েটরা চাকরি খুঁজে পাচ্ছে না। জব মার্কেট কী চায় আর আমরা কী শিখাচ্ছি, তা মিলছে না।’ মিসেস মুনাব্বারা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা পলিসিতে পরিবর্তন দরকার। কোর্স কারিকুলামকে আন্তর্জাতিক মানে নেয়া দরকার।’
বিশ্ব ব্যাংক জানায়, মালয়েশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার মান কমেছে। ফলে সেটি আয়ের ওপর হাত দিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক মনে করে, উচ্চ আয়ের অর্থনীতির জন্য যোগ্য গ্র্যাজুয়েট দরকার; তাই শিক্ষাব্যবস্থার রূপান্তর প্রয়োজন। আরিফ মনে করেন, রাজনীতির শুদ্ধাচার মালয়েশিয়ায় নেই, রিফর্মের কথা না বলাই ভালো, তবে রাজনৈতিক মন্ত্রটি ‘রূপান্তর’ হবে; ‘সংশোধন’ নয়।
মালয়েশিয়া ভিশন-২০২০ থেকে দূরে থাকলেও ২০১৯ সালে আরো একটি নতুন পরিকল্পনা ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এর নাম Shared Prosperity Vision 2030 ২০৩০। পরিকল্পনা মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে।
লেখক : অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব,
বাংলাদেশ সরকার