কম বয়সেই চুল পাকছে?
কম বয়সেই চুল পাকছে? - ছবি : সংগৃহীত
চুল থাকলে পাকবেই। ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে একটি-দু’টি করে চুল বয়সজনিত কারণেই পাকবে। এই নিয়ে বিশেষ উত্তেজিত হয়ে লাভ নেই। তবে বয়স ৩০-এর গণ্ডি ডিঙিয়ে যাওয়ার আগেই চুল পাকতে শুরু করলে সমস্যা! এমন অকালপক্ব চুল দেখা দিলে প্রথম থেকেই সচেতন হতে হবে। নেওয়া উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ। অহেতুক বাজারচলতি সমস্যা নিবারক ওষুধপত্র ব্যবহার করলে আখেরে সমস্যা আরো বাড়বে বই কমবে না।
এক্ষেত্রে প্রথমেই চুল পাকার প্রক্রিয়াটি সম্বন্ধে সহজে বুঝে নেয়া যাক। আসলে আমাদের প্রতিটি চুলের গোড়ায় উপস্থিত রয়েছে হেয়ার ফলিকল। এই জায়গা থেকেই চুল উৎপন্ন হয়। এই হেয়ার ফলিকলের মধ্যেই থাকে মেলানোসাইটস কোষ। এই কোষ থেকে মেলানিন উৎপন্ন হয়। মেলানিন চুলের রং কালো করে। তবে কোনও কারণে হেয়ার ফলিকলের মেলানোসাইটস কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেলানিন উৎপন্ন ব্যহত হয়। ফলে চুলে রং আসে না। চুল সাদা হয়ে যায়।
এবার জেনে নেয়া যাক, ঠিক কোন কোন কারণে কম বয়সেই চুল পাকতে শুরু করে—
অকালপক্ব চুলের নানা কারণ
অকালপক্ব চুলের সমস্যায় বংশগতির বিশাল ভূমিকা রয়েছে। পরিবারে এই সমস্যা থাকলে কম বয়সে চুল পাকার আশঙ্কা থাকে বেশি।
অটোইমিউন থাইরয়েডাইটিস, হাইপো থাইরয়েড, হাইপার থাইরয়েড, শ্বেতি ইত্যাদি রোগ থাকলে অকালপক্ব চুল দেখা দিতে পারে।
অনেকের মাথার কিছুটা অংশ জুড়ে চুল উঠে যায়। এই সমস্যার নাম অ্যালোপেশিয়া এরিয়েটা। এর সঠিক চিকিৎসা হলে চুল ফের গজায়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, সেখানকার নতুন গজিয়ে ওঠা চুলের মধ্যে কয়েকটি চুল সাদা হয়ে যায়।
মাথায় কোথাও কেটে গেলে বা ক্ষত তৈরি হলে পরবর্তী সময়ে সেখানে গজিয়ে ওঠা চুল সাদা হতে পারে।
শরীরে সেরাম ফেরিটিন, ভিটামিন বি ৬, ১২, ডি ৩, ই, এ, সি, বায়োটিন ইত্যাদি কম থাকলে চুল কম বয়সেই পাকতে পারে।
ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, লোহা, সেলিনিয়াম, তামা ইত্যাদি খনিজের ঘাটতিও এই সমস্যা তরান্বিত করে।
শরীরের অত্যন্ত জরুরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাবেও চুল পাকে।
চুলে বেশি পরিমাণে হেয়ার ড্রাই ব্যবহার করলে। বিশেষত, হেয়ার ড্রাইয়ের মধ্যে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড থাকলে এমন সমস্যা হতে পারে। এছাড়া চুলে নিয়মিত ‘হিট’ দিতে থাকলেও চুল অকালে পাকে।
ধূমপায়ীদের দুই-তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রে কম বয়সেই চুল পাকার আশঙ্কা থাকে বেশি।
খুব বেশি রোদে ঘোরাঘুরি করলেও মেলানোসাইটস কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন চুল পাকে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ঘনঘন মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করলেও চুল অকালে পাকতে পারে।
চিকিৎসকের সহায়তা গ্রহণ ছাড়াও নিচের কাজগুলো করতে পারেন আপনি
খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রা
মরশুমি ফল, শাকসব্জি, ডিম, মাছ, গোশত প্রয়োজন মতো খেয়ে শরীরের ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি পূরণ করতে হবে। নিয়মিত পান করতে হবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত গ্রিন টি।
ধূমপান ছাড়তে হবে।
চুল রং করার স্বভাব কমাতে বা ছাড়তে হবে।
অহেতুক চুলে ‘হিট’ দেওয়া চলবে না।
বেশি রোদে বেরলে মাথায় টুপি পরুন বা ছাতা ব্যবহার করুন।
চিন্তা মুক্ত হতে হবে।
কারিপাতা, ভৃঙ্গরাজ বা আমলার রস নারিকেল তেলে মিশিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করা যেতে পারে।
সূত্র : বর্তমান