বেকায়দায় নেতানিয়াহু

নেতানিয়াহু - ছবি সংগৃহীত
মারাত্মক বেকায়দায় পড়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। শনিবার রাতে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে কয়েক শ' মানুষের জমায়েত ঘিরে উত্তেজনা। জমায়েত থেকেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন প্রতিবাদীরা। দুর্নীতি মামলা নিয়ে জেরবার ইহুদি দেশের প্রধানমন্ত্রী। তার উপর খাঁড়ার ঘা হলো দেশে করোনা মোকাবিলার অব্যবস্থা। সব মিলিয়ে দিন দিন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তীব্র হচ্ছে।
গত সাত মাস ধরে প্রত্যেক সপ্তাহে জেরুসালেমে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান প্রতিবাদীরা। দুর্নীতির অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় দেশের শোচনীয় অবস্থা এবং আরো নানা কারণে নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেন তারা। তাদের আরো দাবি, দুর্নীতি নিয়ে আদালতে ট্রায়াল চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না নেতানিয়াহু। ঘুষ নেয়া এবং বিশ্বাসভঙ্গের মতো তিনটি পৃথক মামলা চলছে তার বিরুদ্ধে। এই সপ্তাহেই ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা।
দেশজুড়ে বারবার লকডাউন করে বেকারত্বের শতাংশের পরিসংখ্যান দুই ডিজিটে নিয়ে গেছেন নেতানিয়াহু, এমনটাই অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ইসরাইলের অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়েছে। রোববার থেকেই দেশজুড়ে তৃতীয় দফার লকডাউন শুরু হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে সফল গণটিকাকরণ কর্মসূচির পরও ইসরাইলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। তাতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। অন্যদিকে, আগামী ২৩ মার্চ দেশে নির্বাচন রয়েছে। তার আগে একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত প্রধানমন্ত্রী।
সূত্র : ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধ তদন্তে আইসিসির রুল
বিবিসি
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি একটি রুল জারি করে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সংঘটিত যুদ্ধপরাধ ও নৃশংসতার বিচার করার এখতিয়ার রয়েছে তাদের।
শুক্রবারের এই রায়ের ফলে এখন থেকে আইসিসিতে পশ্চিমতীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজায় সংঘটিত ইসরাইলি নৃশংসতার বিচার চাইতে পারবে ফিলিস্তিনিরা। এই রায়ে ফিলিস্তিনিরা খুশি হলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ১৯৬৭ সালে ৬ দিনের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত এলাকায় নির্বিচারে শিশু হত্যা থেকে শুরু করে স্থানীয়দের জমি দখল করে সেখানে অবৈধ ইহুদি বসতি গড়ে আসছে ইসরাইল।
যুগের পর যুগ ধরে জায়নবাদী এই রাষ্ট্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ভয়াবহ নৃশংসতা চালিয়ে এলেও এর বিচার পর্যন্ত চাইতে পারছে না অধিকৃত পশ্চিমতীর, গাজা ও জেরুজালেমের বাসিন্দারা। ২০১৫ সাল থেকে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সঙ্ঘাতের তদন্ত করে আসছেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ফাতৌ বেনসুদা। এর আগে তিনি বলেছিলেন, সেখানে (ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে) যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে তা ‘বিশ্বাস করার যৌক্তিক ভিত্তি’ রয়েছে। এ ব্যাপারে শুক্রবার জারি করা রুলে আইসিসি জানিয়েছে, ইসরাইলের দখলকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব জেরুসালেমকে এখন থেকে এ আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে আনা হলো।
ইসরাইল আইসিসির সদস্য নয়। দেশটি এই বিচারিক এখতিয়ার প্রত্যাখ্যান করেছে। আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থাটিকে ‘রাজনৈতিক সংগঠন’ আখ্যা দিয়ে এর বিচার থেকে নিজেদের ‘সব নাগরিক ও সেনাকে রক্ষা করার’ অঙ্গীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ‘আদালতের এই সিদ্ধান্তে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের তার নাগরিকদের রক্ষা করার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করবে। তবে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিতায়েহকে উদ্ধৃত করে দেশটির বার্তা সংস্থা ওয়াফা বলেছে, (আইসিসির) এই সিদ্ধান্ত ন্যায়বিচার ও মানবতা, সত্যের মূল্যবোধ, স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা এবং শহীদদের রক্ত ও তাদের পরিবারের জন্য এক বিজয়।