বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে যাচ্ছেন ট্রাম্প!
ট্রাম্প - ছবি সংগৃহীত
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গোপনীয় গোয়েন্দা তথ্য পাঠানোর পক্ষপাতী নন জো বাইডেন। শুক্রবার একটি টিভি চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের নয়া বাসিন্দা।
ওই দেশের দীর্ঘ দিনের রীতি মেনে সাবেক প্রেসিডেন্টের কাছে গোয়েন্দা দফতরের গোপন রিপোর্ট পাঠানো হয়। কিন্তু বাইডেনের মতে, প্রকাশ্যে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহে প্ররোচনা দিয়ে সেই ঐতিহ্যগত অধিকার হারিয়েছেন ট্রাম্প।
সাক্ষাৎকার পর্বে প্রশ্নকর্তা আমেরিকার নয়া প্রেসিডেন্টের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ট্রাম্পের তরফে অনুরোধ এলে প্রথা মেনে তাকে গোপনীয় গোয়েন্দা রিপোর্ট পাঠানো হবে কি না। জবাবে বাইডেন বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, তার প্রয়োজন আছে। গোয়েন্দা ব্রিফিং নিয়ে তিনি (ট্রাম্প) করবেনই বা কী? বড় জোর কিছু কথা মুখ ফসকে বলে ফেলবেন।’’
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাসকি জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন দৈনিক গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো পড়তেন না ট্রাম্প। সপ্তাহে দু’-তিনবার রিপোর্টগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাকে পড়ে শোনানো হত। সম্প্রতি জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের ট্রাম্প জমানার ডেপুটি ডিরেক্টর সু গর্ডন একটি সংবাদপত্রে লেখা নিবন্ধে প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে গোপনীয় গোয়েন্দা রিপোর্ট না পাঠানোর পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, ট্রাম্প ‘অসৎ অভিপ্রায়ে অসৎ শক্তির সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন’।
ক্যাপিটল হিংসার দায়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে পাশ হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রস্তাবটি এখন উচ্চকক্ষ সিনেটের বিবেচনাধীন। এই আবহে গোয়েন্দা রিপোর্ট নিয়ে বাইডেনের ‘বার্তা’ ট্রাম্পের অস্বস্তি আরো বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে। টিভি সাক্ষাৎকারে অবশ্য আগামী সপ্তাহের ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বাইডেন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘আমি এখন সিনেটের সদস্য নই। তবে সিনেটের সদস্যদের অনুরোধ করব স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে।’’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাতিলে বাইডেনের দ্বিতীয় দফা স্বাক্ষর
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের ক্ষমতার ব্যবহার এবং কংগ্রেসের সমর্থন ছাড়াই তার পূর্বসূরীর অভিবাসন নীতি বাতিল করার আদেশে দ্বিতীয় দফায় সই করেছেন।
এ আদেশের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি পারিবারিক বিচ্ছেদ, সীমান্ত সুরক্ষা এবং আইনী অভিবাসনের বিষয়ে নয়টি নির্বাহী পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রস্তাবিত আইন অনুসারে দেশটিতে থাকা আনুমানিক এক কোটি ১০ লাখ অভিবাসীকে আইনি মর্যাদা ও নাগরিকত্ব দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন রোধে নেয়া আইনি এবং অবৈধ পদক্ষেপের ব্যাপক পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করছেন।
কংগ্রেসের কাছে পাঠানো অভিবাসন প্রস্তাব নিয়ে আইন প্রণেতারা দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় রয়েছে। তবে, বিভক্ত কংগ্রেস থেকে যথেষ্ট সমর্থন না পেলে এ নিয়ে বাইডেনকে ক্ষমতায় থাকার পুরো সময়টাতে কাজ করতে হতে পারে।
বাইডেন এরই মধ্যে ট্রাম্পের নেয়া কিছু পদক্ষেপ বাতিল করে দিয়েছেন এবং পরবর্তী কয়েক মাসের নীতিগত পর্যালোচনা পাওয়া ফলাফলের উপর নির্ভর করে আরো সুদূরপ্রসারী পুনর্বিবেচনার ভিত্তি স্থাপন করেছেন।
এই আদেশ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, ‘আমি কোনো নতুন আইন তৈরি করছি না, আমি কেবল খারাপ নীতিগুলো বাদ দিচ্ছি।’
মঙ্গলবার সিনেটের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি হিসেবে শপথ নেয়া আলেজান্দ্রো মায়োরকাস পরিবার বিচ্ছেদ মূলত মা-বাবা এবং শিশুদের আবারো একসাথে করার বিষয়ে মনোনিবেশ করার জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন। তবে এটা স্পষ্ট নয়, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে আদালতের আদেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার শিশুকে আলাদা করা হয়েছিল যাদের প্রায় ছয় শ’ জনের মা-বাবা এখনো আদালতের নির্ধারিত কমিটির সাথে যোগাযোগ করেনি।
বাইডেন বলেন, আমরা আগের প্রশাসনের নৈতিক ও জাতীয় লজ্জা ঘুচানোর কাজ করতে যাচ্ছি।
এর মাধ্যমে পৃথক হয়ে পড়া পরিবারগুলোকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আইনী অবস্থানের সম্ভাবনার বিষয়ে কাজ করবে।
পরিবারগুলোকে পুনরায় একত্রিত করার বিষয়ে মামলা দায়ের করা আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থাকা হাজার হাজার পরিবারের সবাইকে আইনী মর্যাদা দেয়ার পাশাপাশি সরকারি ব্যয়ে পরিবার এবং আইনজীবীদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়েছে।
সাউদার্ন প্রোভার্টি ল সেন্টার অ্যাকশন ফান্ডের পলিসি কাউন্সিলর কেলি গার্সিয়া বলেন, এই আদেশগুলো উৎসাহজনক তবে নির্দিষ্ট পদক্ষেপের অভাবে ‘অভিবাসী সম্প্রদায়গুলো এ থেকে শিগগিরই কেনো সুবিধা পাবেন না’।