দয়ামায়াহীন লেবিয়াথন দানব
নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প - ছবি সংগৃহীত
গত বুধবার বিদায়ী এক আমেরিকান রাষ্ট্রপতি দ্বিতীয়বারের জন্য অভিশংসিত হলেন। আমেরিকান ইতিহাসে এটি এই প্রথম। নিশ্চিতভাবেই, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রক্ষা করার মতো অবস্থা এখন নেই। লোকটি অমার্জিত প্রকৃতির ব্যক্তি!
যাইহোক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি শক্তির আমেরিকার সত্যিকারের মালিকদের কাছ থেকে দেশটির প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমেরিকার ক্ষেভের প্রকাশ ঘটেছে ট্রাম্পের অমার্জিত ধরনের আচরণে।
এই ক্রোধ আমেরিকা শেতাঙ্গ অ্যাংলো-স্যাকসন প্রোটেস্ট্যান্টস (ডাব্লুএএসপি)-এর কাছ থেকে থেকে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার ফলাফল!
ট্রাম্পের প্রায়শ প্রকাশ করা জনতুষ্টিবাদী ক্রোধ আসলে ছিল শ্বেতাঙ্গদেরই ক্রোধ যারা (মূলত ব্রিটিশ যার মধ্যে আইরিশ, স্কটিশ, ফরাসি, ডাচ, জার্মান-বংশোদ্ভূত ঔপনিবেশবাদী, সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার সাদা মানুষ রয়েছে) আমেরিকা প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং ইহুদি শক্তির কাছে আমেরিকার বন্দীকরণ এবং দাসত্বের বিষয়ে তারা ক্ষুব্ধ ছিল!
বৈশ্বিকভাবে প্রভাবশালী একটি ইহুদি সংবাদপত্র আমাকে লক্ষ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছে কারণ আমি আমার আগের লেখায় লিখেছি যে আমেরিকা ইহুদি শক্তির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে!
তারা ফ্যাসিবাদী! তারা কেবল বিশ্বকেই বোকা বানাতে চাইছে না, যারা তাদের মিথ্যা প্রকাশ করে দেয় এবং নিজেদেরকে সংশোধন করছে তাদেরও লক্ষ্যবস্তু করছে!
আমি লন্ডনে ফিরে এসে তাদের বেশ ভালোভাবে জানতে পেরেছি!
যদিও ব্রিটিশ ও ইহুদিরা বিশ্বজুড়ে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তবে যুক্তরাজ্যেও ইহুদিরা প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত শক্তিশালী। এমনকি এ বিষয়ে কাউকে মন্তব্য করারও সুযোগও দিতে চায় না তারা। এটি করা হলে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে 'ইহুদিবিদ্বেষী' হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, যার ফলে ক্ষতি হবে প্রভূত!
এই দস্যুদের কারো প্রতি দয়া নেই; তারা দয়ামায়াহীন লেবিয়াথন দানব!
মানবাধিকার ও স্বাধীনতার দাবি করে, তাদের অমানবিক রীতিনীতি, গণমাধ্যমে তাদের শক্তির ব্যবহার করে ঔপনিবেশবাদের মিডিয়াটিক ফর্মগুলির রূপকথার দাসে পরিণত করার জন্য। তারা তাদের ক্ষমতার ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোনো কথা শুনতে চায় না!
তারা চায় যে তাদের মিথ্যা কুহেলিকার প্রতি সবাই অন্ধ বিশ্বাস রাখুক এবং তাদের সামনে নতজানু থাকুক!
মার্কিন মিডিয়া কি ইহুদি শক্তির দ্বারা প্রভাবিত নয়? ইহুদিরা কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, আর্থিক ব্যবস্থা, হলিউড, সিলিকন ভ্যালি, সংস্কৃতি শিল্প ও অস্ত্র শিল্পের নিয়ন্ত্রণে নেই?
এটা কি ভুল?
আপনি দেখেছেন, হোয়াটসঅ্যাপ সর্বশেষ তুরস্কে কী করেছে। এটি ডিজিটাল ফ্যাসিবাদের পরম এক রূপ! এটি সমস্ত ব্যবহারকারীর ডেটা নিয়েছে আর তা একটি ডাকাত নেটওয়ার্কের হাতে দিয়েছে! তারা মানবাধিকার বা গোপনীয়তা সম্পর্কে চিন্তা করে না! তাদের কাছে এসব তুচ্ছ! তারাই মানবতার এক নম্বর শত্রু!
টুইটার কীভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছিল তা আপনি প্রত্যক্ষ করেছেন! এ কেমন শক্তি!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় ইহুদিদের নিয়ন্ত্রণাধীন আমেরিকান টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রগুলোর দ্বারা প্রকাশিত সমস্ত ভুয়া সংবাদের কথা স্মরণ করুন!
তারা আক্ষরিক অর্থেই ট্রাম্পের অবয়বে একটা রাক্ষস তৈরি করেছিল! তারা ধারণা তৈরির মাধ্যমে একটি দানব আবিষ্কার করেছিল! তারা জনগণের মধ্যে এটি ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং তাদের মগজ ধোলাই করেছিল!
তারা তুরস্কে একই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে! এবার এটি প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিপক্ষে!তবে তারা সেখানে থামবে না; তারা পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলেও এইরকম দুষ্ট, ঘৃণ্য উপায় অবলম্বন করতে চলেছে!
তারপরে রাষ্ট্রপতি-নির্বাচিত জো বাইডেনের উদ্বোধনী দিনে, আমেরিকার গভীর ক্ষমতা বলয়ের যে শক্তি রয়েছে তা বাইডেনের নির্বাচন নিয়ে চলমান সমস্ত সন্দেহকে দূর করবে, তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়াকে বৈধতা দেবে, ট্রাম্পকে অভিশংসন করবে এবং এই প্রক্রিয়ায় তাকে আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আসা ঠেকানোর জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেবে। এটি ফ্যাসিবাদী অভ্যুত্থান যা উত্তরআধুনিক -পরবর্তী অভ্যুত্থান হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত হচ্ছে : এটি একটি মিডিয়াটিক অভ্যুত্থান!
ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ!
ইহুদি শক্তি বেশ কয়েকটা জায়ান্ট কোম্পানির সহায়তায় সরকারকে নামিয়ে আনতে যথেষ্ট শক্তিশালী!
এসব কি সত্য নয়? নোম চমস্কিকে জিজ্ঞাসা করুন এবং তিনি আপনাকে বলবেন যে,এই ডিজিটাল ফ্যাসিবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং বিশ্বকে দাস করে চলেছে।
সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য সমস্ত মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বৈশ্বিক ইহুদিবাদের শক্তির উপর আমাদের নির্ভরতা শেষ করা এবং নিজেকে মুক্ত করা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই! তা না হলে দেখতে পাবেন তারা গবাদি পশুর মতো তুরস্ক ও বিশ্ব উভয়কেই নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে!
ডেইলি ইনি সাফাক থেকে অনুবাদ : মাসুম খলিলী