বিষপানে নয় গোবর-পানি
বিষপানে নয় গোবর-পানি - ছবি সংগৃহীত
ছোটবেলায় জীবন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতাম। অবশেষে মনে হলো জীবন সাইন রেখা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ জীবনে আছে আপস অ্যান্ড ডাউন। জীবনের এই বৈচিত্র্য অনেকেই মেনে নিতে পারে অনেকেই পারে না। যারা পারে না তারা হতাশায় ভোগেন। হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে মুক্তির চেষ্টা করেন জীবন হরণের মাধ্যমে। অনেকেই বিষপানে কেউবা ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। এমন পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রাখা দুষ্কর। তার পরও পরিস্থিতি তো সামাল দিতে হবে।
কেউ যদি বিষপান করেন বা কোনো জাতীয় ওষুধ সেবনে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তাহলে প্রথমে যে কাজটি করতে হবে- দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব কাছের কোনো হাসপাতালে নিতে হবে। অনেকে মানসম্মানের কথা চিন্তা করে বাড়িতে ওঝা বা হাতুড়ে এনে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার চেষ্টা করে মূল্যবান প্রাণ নষ্ট করেন। মনে রাখবেন বিষপানের পর এক ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে আনতে পারলে চিকিৎসকদের চিকিৎসা করা সহজ হয়। কারণ এই সময়ের মধ্যে এলে পাকস্থলী থেকে অশোষিত বিষ বের করার জন্য স্টমাক ওয়াশ করা যায়। এ সময়ের পর হাসপাতালে এলে স্টমাক ওয়াশ করালে যতটা লাভ হওয়ার কথা সে পরিমাণ হয় না। তবে মাথায় রাখবেন সব ধরনের বিষ বা ওষুধ সেবনে কিন্তু স্টমাক ওয়াশের দরকার নেই। কোন ক্ষেত্রে ওয়াশ দিতে হবে তা চিকিৎসকই ঠিক করবেন। চিকিৎসককে স্টমাক ওয়াশ দেয়ার জন্য অযথা জোরাজুরি করবেন না।
আমাদের দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিটনাশক জাতীয় বিষ সেবন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ বিষ শরীরে বা কাপড় চোপড়ে লাগলে সেখান থেকে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে বিষক্রিয়া করতে পারে। তাই বিষপান করলে কাপড়-চোপড় খুলে শরীর পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে পারেন।
বিষপান করলে অনেকেই গোবর মিশ্রিত পানি পান করায়ে বমি করার চেষ্টা করেন। এটি ঠিক নয়। যদি বিষপান করা ব্যক্তি অচেতন বা অবচেতন হয় তাহলে বমি ফুসফুসে চলে যেতে পারে যা মারাত্মক। কেরোসিন বা এসিড পান করলে বমি করানোর চেষ্টা করবেন না। এতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
ওষুধ সেবন করলে ব্যবহৃত ওষুধের খোসা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসুন। চিকিৎসা দিতে সুবিধা হবে। শিশুরা ভুলে ওষুধ সেবন, এসিড, বিষপান করতে পারে। তাই এগুলো হাতের নাগালের বাইরে রাখুন।
একটি কথা মাথায় রাখবেন যে একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে সে এটা বারবারই করবে। তাই দেরি না করে সুস্থ হওয়ার সাথে সাথেই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
টক ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে
নুরে আলম সিদ্দিক
টক ফল শরীরের জন্য উপকারী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। টক ফলে এন্টিঅক্সিডেন্ট বেশি পরিমাণে থাকে, যা শরীরে জমা হওয়া খারাপ পদার্থ বের করে দেয় বা ধ্বংস করে। আগেই গবেষণা করে দেখা গেছে যে, টক ফল বেশি পরিমাণে খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। গবেষকরা বলেছেন, টক ফলে ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
এতে প্রায় পাঁচ হাজার বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল থাকে। নতুন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কমলা, আঙুর ও অন্যান্য টক ফল খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে প্রায় ১৯ গুণ কমে। মেয়েদের ওপর এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়।
এর কারণ হিসেবে গবেষকরা ফ্ল্যাভোনয়েডে ফ্ল্যাভোনোন নামে নতুন একটি কেমিক্যাল খুঁজে পান। এটিই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। প্রায় ১৪ বছর ধরে এ গবেষণাটি পরিচালনা করে ব্রিটেনের নরিস মেডিক্যাল স্কুল। দেশব্যাপী প্রায় ৭০ হাজার নার্স এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। এটি প্রকাশিত হয়েছে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের ‘স্ট্রোক’ জার্নালে।