ভারতে কৃষকেরা কেন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে
ভারতে কৃষকেরা কেন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে - ছবি সংগৃহীত
নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে ভারতে লাখ লাখ কৃষক ২৬ নভেম্বর থেকে আন্দোলন করছে। রাজধানী নয়াদিল্লির চারদিকে বিভিন্ন সীমান্তপথে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকরা লাগাতার অবস্থান করছে। তারা নতুন এ কৃষি আইন বাতিল চাচ্ছে। কারণ কৃষকদের বিশ্বাস, নতুন আইনের ফলে কৃষকদের আয় কমে যাবে। কৃষকরা বড় বড় বেসরকারি ব্যবসায়ী এবং করপোরেট সংস্থার কাছে অসহায় হয়ে পড়বে। কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষকদের সুরক্ষায় আগে সরকারি যে সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল তা আর থাকবে না।
সরকারের দাবি, নতুন আইন কৃষকদের জন্য সহায়ক হবে। মিডিলম্যানদের দৌরাত্ম্য দূর হবে। কৃষকরা তা মানতে পারছে না। দুই পক্ষের মধ্যে অনেক আলোচনা হয়েছে। তেমন কোনো ফল হয়নি। কৃষকরা আন্দোলন থেকে পিছু হটছে না। দিল্লি অবরোধকে তারা আরো বড় আকারের রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে।
ভারতে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১০ জানুয়াারি পর্যন্ত ৬৬ জন কৃষক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। তীব্র ঝড় বৃষ্টি, শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা নতুন আইনের বিরুদ্ধে রাজপথে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। ট্রাক্টর, ট্রেইলারের নিচে রাত যাপন করছে অনেক কৃষক। অনেকের আশ্রয় হয়েছে লোকজনের দেয়া তাঁবুর নিচে। অনেকে নিজেরা ক্যাম্প করে রাজপথে জীবন যাপন করছে।
অপর দিকে, কৃষকের দিল্লি যাওয়া আটকে দিয়েছে সরকার। কৃষকদের ইচ্ছা- ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে বড় আকারের ট্রাক্টর রেলির আয়োজন করা।
প্রায় দুই মাস ধরে চলমান কৃষি আন্দোলনের মূল কেন্দ্র এখন সিংহু সীমান্ত। তরুণ, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ এখানে দিন-রাত শীত, বৃষ্টি উপেক্ষা করে অবস্থান করছে। আন্দোলনরতদের দাবি, তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন না বরং তারা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছে। অনেক পরিবারের সব সদস্য যোগ দিয়েছে আন্দোলনে। অনেক কৃষকের কলেজপড়–য়া ছেলে-মেয়েও যোগ দিয়েছে আন্দোলনে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ একসাথে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে এখানে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এটি এখন আর শুধু কৃষক আন্দোলনে সীমাবদ্ধ নেই, বরং সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সরকার তিনটি কৃষি আইন পাস করে। এতে কৃষিপণ্য উৎপাদন, কৃষিপণ্য মজুদ, বিক্রি এবং মার্কেটিং বিষয়ে আগের আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন আইনে ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুদের অনুমতি দেয়া হয়েছে যা আগের মজুদ আইনের বিরোধী। আগে কেবল সরকার অনুমোদিত নির্ধারিত লোকজন কৃষিপণ্য মজুদ করতে পারত। এখন ব্যবসায়ীদের এ অধিকার দেয়ার ফলে দুর্যোগের সময় ব্যবসায়ীরা পণ্যমূল্য মুজদ বাড়িয়ে সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারবে, পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে পারবে মর্মে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতে কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষায় বিভিন্ন রাজ্যে সরকারি বিপণন বোর্ড রয়েছে। এর নাম অ্যাগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটিং কমিটি বা এপিএমসি। এখানে চাল গমসহ কয়েকটি কৃষিপণ্যের ন্যূনতম দাম নির্ধারিত রয়েছে। বেশির ভাগ কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য এপিএমসিতে অকশনে বিক্রি করত। এপিএমসি মার্কেটে পণ্য কারা কিনতে পারবে সে বিষয়েও এপিএমসি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারত। কোনো কৃষিপণ্য অতিরিক্ত উৎপাদিত হলেও দাম যাতে অতিরিক্ত পড়ে না যায় এবং কৃষকরা যাদে ন্যূনতম একটি দাম পায় সে বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা ছিল। নতুন আইনে এ মান্দি সিস্টেম পরিবর্তন করা হয়েছে। কৃষক এখন সরাসরি বড় ব্যবসায়ী, সুপার মার্কেট, চেইন শপ এবং অনলাইনেও প্রচলিত বাজার দরে পণ্য বিক্রি করতে পারবে।
কৃষকদের দাবি, নতুন আইনে কৃষকদের জন্য বিদ্যমান অনেক সুরক্ষা ব্যবস্থা তুলে দেয়া হয়েছে। কৃষি বাজারে বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রবেশের ফলে ক্ষুদ্র কৃষকদের বারগেইনিং পাওয়ার থাকবে না। কৃষি বাজারে বেসরকারি খেলোয়াড়দের দৌরাত্ম্য বাড়বে এবং তারা করপোরেট সংস্থার কাছে অসহায় হয়ে পড়বে। জমির মালিকানা ঝুঁকিতে পড়বে। কয়েক দশক ধরে তারা যে সুবিধা পেয়ে আসছে তা বাতিল হয়ে যাবে।
২০২০ সালে ১৫ এবং ১৮ সেপ্টেম্বর লোকসভায় পাস হয় কৃষি আইন। এরপর ২০ এবং ২২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সভায় পাস হয় তিনটি কৃষি আইন। রাজ্য সভায় বিজেপি সরকার সংখ্যালঘিষ্ঠ। কিন্তু কণ্ঠ ভোটে পাস হয় আইন তিনটি। বিরোধী দলের সদস্যরা আইনগুলো পাসের জন্য পূর্ণ ভোটের আবেদন জানায় কিন্তু তা অগ্রাহ্য করা হয়।
নতুন আইনকে কৃষকবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিভিন্ন কৃষক ইউনিয়ন ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে। তাদের অভিযোগ এ আইন কৃষকদের করপোরেট-এর দয়ার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সরকার অভিযোগ করছে ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কৃষকরা আন্দোলন করছে। আন্দোলনকারীদের সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মদদ দিচ্ছে।
নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় পাঞ্জাব রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে। পাঞ্জাবের ধীরগতির অর্থনীতি এবং বিশেষ করে সেখানকার কৃষি খাতের দুরবস্থার কারণে কৃষকদের মধ্যে আগে থেকে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল। ২৬ নভেম্বর পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকরা ট্রাক্টর নিয়ে দিল্লি অভিমুখে মার্চ করে। তাদের উদ্দেশ্য দিল্লি অবরোধ করা। কিন্তু পথে পুলিশের সাথে তাদের সঙ্ঘাতের ঘটনা ঘটে। তবে তারা আন্দোলন থেকে সরে আসেনি। উত্তর প্রদেশ, কর্নাটক, তামিলনাড়–, উড়িষ্যা, কেরালাসহ অন্যান্য রাজ্যেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। হাজার হাজার কৃষক ইউনিয়ন দিল্লি অভিমুখে লংমার্চে যোগ দেয়।
তারা এ আন্দোলনের নাম দেয় ‘দিল্লি চলো’। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথমে হরিয়ানা রাজ্যে এবং পরে দিল্লিতে প্রবেশে বাধা দেয়। তাদের ঠেকাতে মারমুখী অবস্থান নেয় পুলিশ। ২৬ নভেম্বর দেশব্যাপী ভারত বন্ধ বা ধর্মঘটের ডাক দেয় কৃষক ইউনিয়নগুলো। প্রায় ২৫ কোটি মানুষ যোগ দেয় এ আন্দোলনের সমর্থনে।
ভারতের কৃষকদের সমর্থনে ভারতের বাইরেও বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন শহরে ভারতের কৃষকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে লোকজন রাস্তায় নেমেছে।
৫০টির বেশি ইউনিয়ন সরাসরি যুক্ত রয়েছে এ আন্দোলনের সাথে। এক কোটি ৪০ লাখ ট্রাক ড্রাইভারের প্রতিনিধিত্বকারী পরিবহন ইউনিয়নগুলোও রাস্তায় নেমে আসে কৃষকদের সমর্থনে। ৪ ডিসেম্বর সরকারের সাথে ইউনিয়ন নেতাদের আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় ৮ ডিসেম্বর তারা আবার দেশব্যাপী ধর্মঘটের পরিকল্পনা করে। সরকার আইনের কিছু ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে। কৃষকরা চাচ্ছে আইন পুরোপুরি বাতিল। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বরাবর বেশ কয়েকটি আবেদন জমা পড়ে দিল্লির চার দিক থেকে অবস্থানরত কৃষকদের অবরোধ তুলে দেয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। কোর্ট সরকারকে আইনটি স্থগিতের কথা জানায় যা সরকার কানে নেয়নি। ৩০ ডিসেম্বর সরকার কৃষকদের দুটি দাবি মানতে রাজি হয়। এ দুটি হলো- দূষণ আইন থেকে কৃষকদের বাইরে রাখা এবং বিদ্যুৎ অর্ডিন্যান্স। ৪ জানুয়ারি কোর্ট কৃষকদের পক্ষে প্রথম আবেদন নথিভুক্ত করে। ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের সাথে কৃষকদের সাত দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯৯০ সাল থেকে ভারতে কৃষকদের আত্মহত্যা বড় ধরনের দুর্যোগে পরিণত হয়েছে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ভারতে ৪২ হাজার ৪৮০ জন কৃষক ও দিনমজুর আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে সরাসরি কৃষকের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। ১৯৯৫ সাল থেকে দুই লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৮ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। এশিয়া টাইমসের খবর অনুযায়ী, ১৯৯৬ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতে তিন লাখ ৩৩ হাজার কৃষক আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে শুধু ঋণ পরিশোধ করতে না পারার কারণে। ২০১৯ সালে ১০ হাজার ২৮১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছে। হিন্দুস্তান টাইমসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০১৮-২০১৯ সালে ভারতের একজন কৃষকের গড় মাসিক আয় ছিল ১৪০ ডলার বা ১০ হাজার ৩২৯ রুপি।
এক হেক্টরের কম জমি রয়েছে ভারতে এরূপ কৃষকের সংখ্যা ৭০ শতাংশ। মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে এ ধরনের কৃষক সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব কৃষক ৪০ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করে উচ্চ সুদে অনানুষ্ঠানিক উৎস থেকে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে- ভারতে বাড়ি ও গাড়ির জন্য যথাক্রমে ৯ ও ১১ শতাংশ সুদে ঋণ পাওয়া গেলেও কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে ঋণের সুদ হার ১৭ শতাংশ। নতুন কৃষি আইনে কৃষকদের আত্মহত্যার সংখ্যা আরো বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, পাঁচ বছরের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ বৃদ্ধি (ডাবল ফার্ম ইনকাম) করার। তিনি এখন এ প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ২০২২ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করেছেন। আর সরকারি কর্মকর্তারা ডাবল ইনকামের সংজ্ঞা নিয়ে নানা ধরনের কথা বলছেন। অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রকৃতপক্ষে ২০১৪ সাল থেকে ফার্ম ইনকাম স্থির রয়েছে।
কৃষকদের দাবি, প্রত্যেক ক্রেতা সরকারি বা বেসরকারি যেই হোক তারা যেন সরকারি নির্ধারিত মূল্য বা তার চেয়ে বেশি দরে কৃষকদের কাছে পণ্য ক্রয় করে। এ বিষয়ে তারা সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাচ্ছে। সরকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিওর কাছে করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কৃষকদের ন্যূনতম মূল্য তথা মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস এমএসপি সাবসিডি দিতে পারবে না।
এখনো ভারতে জীবিকার প্রধান উৎস হলো কৃষি। ভারতে ১৩৮ কোটি মানুষের ৭০ কোটির বেশি কৃষিকাজ এবং কৃষিনির্ভর অন্যান্য কাজের সাথে জড়িত। কিন্তু কৃষিতে এত লোক জড়িত থাকলেও ভারতের জিডিপিতে কৃষির অবদান মাত্র ১৬ শতাংশ। ৫০ বছর আগে এ হার ছিল ৪৩ ভাগ। অনেকের মতে, নয়াদিল্লির রাজপথে কৃষক আন্দোলনের মূল কারণ নিহিত এখানে। বংশপরম্পরায় কৃষিজমি ছোট ছোট অংশে ভাগ হয়ে যাওয়ার ফলে কৃষিতে উৎপাদন বৃদ্ধি কঠিন হয়ে পড়েছে কৃষকদের জন্য। এতে করে কৃষকদের ক্ষমতা কমেছে। প্রযুক্তি, যান্ত্রিকীকরণ, স্টোরেজ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, দীর্ঘ পথে পণ্য পরিবহনসহ কৃষি অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ সীমিত হচ্ছে যা কৃষির অস্তিত্বের জন্য হুমকি। চীনে ৬০ শতাংশ এবং ব্রাজিলে ৭৫ শতাংশ কৃষি ফার্ম যন্ত্রনির্ভর। এর বিপরীতে ভারতে মাত্র ৪০ শতাংশ কৃষি ফার্ম যন্ত্রনির্ভর।
জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুসারে, বিশ্বের শীর্ষ দুধ উৎপাদনকারী দেশ ভারত। আর চাল, গম, ইক্ষু, তুলা এবং চীনা বাদাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের জন্যই এসব পণ্যের আরো উৎপাদন বৃদ্ধি দরকার।
ভারতের অর্থনীতি ক্রমাবনতির দিকে। করোনা লকডাউনের কারণে দিল্লি, মুম্বাইসহ বিভিন্ন শহরে স্বল্প বেতনে চাকরিরত লাখ লাখ মানুষ গ্রামে ফিরেছে। চাকরি হারানোর পর তাদের অনেকের জমানো মূলধনও শেষ। শত শত মাইল হেঁটে পাড়ি দিয়ে গ্রামে ফেরা এসব লোকদের কারণে কৃষিজমির ওপর চাপ বেড়েছে অনেক।