শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে!

শীতকালে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে! - ছবি সংগৃহীত
এসে পড়েছে শীত। আর এর জেরে হার্টের নানা সমস্যা বাড়ার আশঙ্কাও প্রবল হয়ে ওঠে। বাড়তে পারে হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও। বিশেষজ্ঞদের কথায়, শীতকালে আবহাওয়া পরিবর্তনের জেরে আমাদের শরীরেও নানা পরিববর্তন হয়। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের চাহিদা ও রক্ত সংবহনের বিষয়টিতেও পরিবর্তন হয়। অনেক সময় আমাদের হৃদযন্ত্র পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এর পাশাপাশি রক্তচাপ, কোলেস্টেরল-সহ একাধিক সমস্যাও মাথাচাড়া দেয়। তাই এই সময়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে একটি সুস্থ ও নিয়ন্ত্রিত জীবনশৈলীর খুব প্রয়োজন।
হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে বড় ইঙ্গিত হল অ্যাকিউট চেস্ট পেন (Acute Chest pain)। তবে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ স্ত্রী ও পুরুষ ভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। এই বিষয়ে বিস্তর পর্যালোচনা করেছেন বিএম বিরলা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের কার্ডিওলজি বিভাগের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ অঞ্জন সিওটিয়া। তার কথায়, কার কখন হার্ট অ্যাটাক হবে, সেই বিষয়ে অনুমান করা অসম্ভব। এই রোগের বিরুদ্ধে সবার শরীরে যে যথেষ্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উপস্থিত, তা বলা মুশকিল। আমাদের মধ্যে যে কারও হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল ওষুধ খাওয়া বা সার্জারির পরও এর আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে আগাম পদক্ষেপ নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যাতে এই হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমানো যায়, সেজন্য নিজেদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। সুস্থ জীবনশৈলি এবং প্রয়োজন মতো ওষুধ কিছুটা হলেও এই রোগের ঝুঁকি কমাবে।
তিনি জানিয়েছেন, হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে কোনো একটি নির্দিষ্ট সমস্যা দায়ী নয়। এক্ষেত্রে বয়স, ফ্যামিলি হিস্ট্রি, জেনেটিক কারণ, হাই ব্লাড প্রেসার, হাই কোলেস্টেরল একাধিক বিষয় দায়ি হতে পারে। তাই রিস্ক ফ্যাক্টর অর্থাৎ হাই ব্লাড প্রেসার, হাই কোলেস্টেরল, ধূমপান, ওজন নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক বিষয়ে নজর দিতে হবে। যাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, অবসাদ কমানো যায়, সেটি দেখতে হবে। ভালো খাবার খেতে হবে। তবে ধূমপান ত্যাগ ও অবসাদ কমানোর উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন ডা. অঞ্জন সিওটিয়া।
কথায় আছে, নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধই ভালো। এই বিষয়টির উপরও আলোকপাত করেছেন ড. অঞ্জন সিওটিয়া। তিনি জানিয়েছেন, যাঁদের হৃদযন্ত্র দুর্বল, শীতের সময় তাদের অতিরিক্ত যত্নবান হতে হবে। তাদের নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। চরম আবহওয়া অর্থাৎ ভোরের ঠান্ডা বা কুয়াশা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নিজেদের রুটিনে অল্পবিস্তর পরিবর্তন আনতে হবে। হার্ট ভালো রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার অর্থাৎ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ও সবজি খেতে হবে। পানি পান ও লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রেও নজর দিতে হবে। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ ও পানি খেলে সমস্যা হতে পারে।
বছরজুড়ে করোনা পরিস্থিতির জেরে আমাদের চারপাশের একাধিক জায়গায় বিস্তর পরিবর্তন এসেছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও বিস্তর পরিবর্তন হয়েছে। এক্ষেত্রে অত্যন্ত সচেতনভাবে পদক্ষেপ করতে হবে। রোগীর সমস্যার গভীরে গিয়ে, তা চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। তাই সবক্ষেত্রেই যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা ও সতর্কতা অবলম্বন সর্বাপেক্ষা জরুরি। একই কথা বলছেন বিএম বিরলা হার্ট রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ সিওটিয়া। তার কথায়, নিয়ম মেনে যথাযথভাবে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা করতে হবে। কোনো রকম অবহেলা করা চলবে না।
সূত্র : নিউজ ১৮