আলসারেটিভ কোলাইটিস : উপসর্গ, চিকিৎসা পদ্ধতি ও প্রতিরোধের উপায়

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Dec 24, 2020 08:47 am
আলসারেটিভ কোলাইটিস

আলসারেটিভ কোলাইটিস - ছবি : সংগৃহীত

 

পেটের সমস্যায় বেশিরভাগ মানুষই ভোগেন। পেট ব্যথা থেকে পেট খারাপ তাদের সবসময়েই সঙ্গী। আর পেটের সমস্যায় ভোগা মানেই নিজের প্রিয় খাবারগুলো থেকে আলাদা হওয়া। আর সেটা যে কী কষ্টের, যার হয় সে জানে! এই পেটের সমস্যাগুলোর মধ্যে একটা হলো 'আলসারেটিভ কোলাইটিস'। এই রোগের সাথে ক্রোনস ডিজিজের অনেকটা মিল আছে। এই দুই অসুখকে একসাথে " ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ " বলা হয়।

সাধারণত সব বয়সের মধ্যেই এই রোগ বেশি দেখা দেয়। আলসারেটিভ কোলাইটিস কী ? আমাদের বৃহদত্ন্ত্রকে কোলন বলা হয়। আর এই কোলনের ভিতরে যদি কোনো ক্ষতি হয়, যেমন- জ্বালা, ফুলে যাওয়া, ঘা হওয়া, তখন তাকে বলে কোলাইটিস। মনে করা হয়, কোলনের ভেতরের স্তর অর্থাৎ মিউকোসা দুর্বল হলে এ রোগ হতে পারে।

আলসারেটিভ কোলাইটিস হচ্ছে পেটের প্রদাহজনিত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। এর ফলে বৃহদান্ত্র ও কোলনে প্রদাহ ও ঘা হয় যা রোগীর পেটে মর্মান্তিক ব্যথার সৃষ্টি করে। ছোটো ছোটো আলসার বা ঘাগুলো পুরো কোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আলসারগুলো একে অন্যের সাথে আটকে থাকে। এই রোগ জিনগত কারণে বা পরিবেশগত কারণে হতে পারে।

কী কী উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা যায়?
ক) বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া
খ) মলের সঙ্গে রক্ত পড়া
গ) পেটে ব্যথা, মলদ্বারের ব্যথা
ঘ) ওজন কমে যাওয়া
ঙ) খেতে ইচ্ছে না হওয়া

রোগ নির্ণয় :
যান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া এই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আর কোনো বিকল্প নেই। সিগময়েডস্কপি , কোলোনোস্কপি , বেরিয়াম ইনেমা, আলট্রাসোনোগ্রাফি - এগুলোর মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। এছাড়াও, রক্তাল্পতা এবং সংক্রমণের কোনো লক্ষণ জানার করার জন্য রক্ত পরীক্ষাও করা হয়।

চিকিৎসা :

সাধারণত কোলাইটিস যদি ইনফেকশন থেকে হয় তাহলে কিছু দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে ঠিক হয়ে যায়। কেউ যদি সুগারের পেশেন্ট হয় তাহলে এই রোগে তাকে ওষুধ দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক নিষেধ মেনে চলতে হয়। তবে, আলসারেটিভ কোলাইটিস যদি তীব্র আকার ধারণ করে তাহলে এর চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত স্টেরয়েড ও সালফাস্যালাজিন দেয়া হয়। কম মাত্রায় এই স্টেরয়েড দেয়া হয়। তবে কারোর ক্ষেত্রে যদি এগুলোও না কাজ করে তখন এই রোগ সারানোর শেষ অস্ত্র হিসেবে অপারেশনকে বেছে নিতে হয়। এক্ষেত্রে কোলন বা পুরো বৃহদন্ত্রই কেটে বাদ দেয়া হয়। সময়মতো চিকিৎসা না করালে এক্ষেত্রে আরো খারাপ কিছু হতে পারে।
যেমন-
ক) কোলনে ক্যান্সার হতে পারে,
খ) চামড়ার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লাল দাগ হতে পারে,
গ) জণ্ডিস হতে পারে,
ঘ) লিভারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে,
ঙ) শরীরে কোমর, মেরুদণ্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায় :
পুরোটা ঠিক করা না গেলেও কিছু কিছু জিনিস মেনে চললে এই রোগ অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে। সেগুলি হলো-

ক) আলসারেটিভ কোলাইটিসের রোগীদের জন্য হলুদ অনেক কার্যকরী। বিশেষ করে হলুদের কারকিউমিন থেরাপির মতো কাজ করে।
খ) বেশিরভাগ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে আলসারেটিভ কোলাইটিসের রোগীদের জন্য উপকারী হতে পারে। এর ফলে নিয়মিত শরীর থেকে বর্জ্যের সাথে বিষাক্ত ও রাসায়নিক উপাদানও বেরিয়ে যায়।
গ) গবেষণায় দেখা যায় যে, বেশিরভাগ মানুষের আলসারেটিভ কোলাইটিসের সমস্যাকে বৃদ্ধি করে স্ট্রেস। তাই স্ট্রেস কমানো উচিত।
ঘ) স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া উচিত। ফ্যাট জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
ঙ) রোজকার ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করা প্রয়োজন।

সূত্র : বোল্ডস্কাই


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us