ড্রোন : তুর্কি সামরিক সক্ষমতার প্রতীক
ড্রোন : তুর্কি সামরিক সক্ষমতার প্রতীক - ছবি সংগৃহীত
তুরস্কের ক্রমবর্ধমান সামরিক সক্ষমতা এবং নিজস্ব অস্ত্র তৈরিতে তার স্বাধীনতার অন্যতম এক প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে তুর্কি ড্রোন। মঙ্গলবার ফরাসি এক দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে এমনটিই দাবি করা হয়।
ফরাসি দৈনিক লিবারেশনে প্রকাশিত ওই প্রবন্ধে বলা হয়, দামে সস্তা, নির্ভরযোগ্য ও অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর হাতে ব্যবহৃত এ ড্রোনটি আঙ্কারার সাফল্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি।
প্রবন্ধে জানানো হয়, তুর্কি বাইরাকতার কোম্পানির উদ্ভাবিত সামরিক এই টিবি২ ড্রোন দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক, উত্তর ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া ও ককেশাসে ব্যবহার করা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়, পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে দুর্বল করার সাথে সাথে তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতিতে এই ড্রোন তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
২৭ ঘণ্টার বেশি উড়তে সক্ষম এই ড্রোন একসাথে চারটি নিখুঁত নিশানার ক্ষেপণাস্ত্র বহন করতে পারে। সাধারণ একটি মার্কিন ড্রোন তৈরির তুলনায় এই ড্রোন তৈরির খরচ কম বলে প্রবন্ধটিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রবন্ধটিতে বলা হয়, গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় এক অভিযানে এটি ব্যবহার করা হয় এবং ওই সময় এটি রুশ প্রযুক্তির বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছিলো।
‘তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন চলমান থাকবে’
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্প তার উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের (এসএসবি) প্রধান ইসমাইল দেমির।
রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা যন্ত্রাংশ কেনার কারণে ওয়াশিংটনের দেয়া অবরোধের প্রেক্ষিতে ইসমাইল দেমির বলেন, ‘দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের উন্নয়ন চলমান থাকবে এবং তা আগের চেয়ে আরো দ্রুত গতিতে। বরং এ পদক্ষেপটি জ্বলে উঠা ও সতর্কতা হিসেবে প্রতিফলিত হবে।
পার্লামেন্টে দেয়া বাজেট বক্তৃতার পর সাংবাদিকদের দেমির আরো বলেন, ‘আমরা আশা করবো, এতে আমাদের সম্পর্কে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ গত সোমবার রাশিয়া থেকে এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কারণে তুরস্কের উপর অবরোধ আরোপ করে।
দিমির ও অপর তিনজন কর্মকর্তাসহ এসএসবিকে লক্ষ করে কাউন্টারিং আমেরিকা’স অ্যাডভারসারিজ থ্রু স্যাঙ্কশনস অ্যাক্টের (সিএএটিএসএ) আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ন্যাটো সদস্যপদের কথা উল্লেখ করে দেমির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আঙ্কারার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক রয়েছে। উভয় পক্ষই এ সম্পর্ক ধরে রাখার ব্যাপারে আগ্রহী বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার দীর্ঘ চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে ২০১৭ সালের এপ্রিলে তুরস্ক এস-৪০০ কেনার জন্যে রাশিয়ার সাথে চুক্তি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যবহারের বিরোধিতা করছেন এই বলে যে, এটা ন্যাটোর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানানসই না। এর ফলে পরবর্তী প্রজন্মের এফ-৩৫ জেটের অনেক কিছু রাশিয়ার কাছে চলে যাবে।
তবে তুরস্ক বলছে, এস-৪০০ ন্যাটো ব্যবস্থার সাথে সমন্বিত হবে না, এবং এটা ওই জোট ও তার অস্ত্রশস্ত্রের জন্য কোনো হুমকি হবে না।
সূত্র : ইয়েনি সাফাক