নাগার্নো-কারাবাখ সঙ্ঘাতে ফ্রান্সের সমুচিত শিক্ষা

এম এ আজীজ | Dec 20, 2020 06:21 pm
নাগার্নো-কারাবাখ সঙ্ঘাতে ফ্রান্সের সমুচিত শিক্ষা

নাগার্নো-কারাবাখ সঙ্ঘাতে ফ্রান্সের সমুচিত শিক্ষা - ছবি সংগৃহীত

 

নাগার্নো-কারাবাখ জয়ের জন্য এবার আজারবাইজান বেশ আটঘাঁট বেঁধে নেমেছিল। তাদের যুদ্ধ প্রস্তুতিতে সহায়তায় এগিয়ে আসে তুরস্ক। ২৭ সেপ্টেম্বর যুদ্ধ ঘোষণার দিনই তুরস্ক সরকার জানিয়ে দেয় যে তারা সর্বশক্তি দিয়ে আজারি ভাইদের সহায়তা করবে। অবশ্য কেবল তুরস্ক নয়, ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক ভালো রেখে সেখান থেকেও কিছু ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছিল আজারবাইজান। তেলের কারণে আজারবাইজানের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করে চলতেই হয় ইসরাইলকে। আজারবাইজানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার পেছনে ইসরাইলের আরেকটি কারণ রয়েছে। আর তা হলো আজারবাইজানের প্রতিবেশি ইরানের বিরুদ্ধে নিজস্ব কর্মসূচি বাস্তবায়নের সুযোগ কাজে লাগানো।

আজারবাইজান এই জয়ের মাধ্যমে বিশ্বকে জানিয়ে দিলো যে তারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে একটি শক্তিশালী জাতি ও দেশ। কেউ তাদেরকে দুর্বল ভাবলে ভুল করবে। তারা আরো প্রমাণ করেছে যে সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী না হলে বিশ্ব মোড়লেরা তাদের নিয়ে খেলতেই থাকবে, কোনো সমস্যার সমাধান করবে না। নিজেদের সমস্যার সমাধান নিজেদেরই করতে হবে।

নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে ওই স্বীকৃতিই অর্জন করেছে আজারবাইজান। যুদ্ধে আর্মেনিয়া পরাজয় মেনে নিয়েছে। তারা নাকচিবান ও দুই অঞ্চলের মধ্যে সংযোগকারী একটি রাস্তাও ছেড়ে দিতে রাজি হয়। এই সুবিধা তুরস্কও পাবে। কারণ এলাকাটি তুরস্কের সাথেও সংযুক্ত।


ফ্রান্স : সমুচিত শিক্ষা
বর্তমানে তুরস্কের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ফ্রান্স। মনে রাখতে হবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত উসমানিয়া খেলাফত ছিল দুনিয়ার একক পরাশক্তি। এই ফ্রান্সই রাশিয়া ও ব্রিটেনকে সাথে নিয়ে উসমানিয়া খেলাফতের পতনের জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে। বিশাল উসামনিয়া খেলাফতের দুর্বলতার সুযোগে সা¤্রাজ্যটি ভেঙে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করার ফন্দি করে। তারা এতে অনেকাংশেই সফল হয়। তবে মুসলিমবিশ্বকে এ জন্য অনেক মূল্য দিতে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে।

তবে এখন ফ্রান্সকে কঠোরভাবে প্রতিরোধ করেছে তুরস্ক। এই যুদ্ধের মাধ্যমে তুরস্ক প্রমাণ করেছে যে তাদেরকে আর দমিয়ে রাখা যাবে না, তারা শিগগিরই বিশ্বশক্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। আর্মেনিয়ার এই পরাজয় থেকে ফ্রান্সসহ পাশ্চাত্যের দেশগুলো শিক্ষা গ্রহণ করবে বলে আশা করা যায়। এই যুদ্ধটি এমন এক সময় শুরু হয় যখন আমেরিকা তার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিল যে কারনে আজারবান আর্মেনিয়ার যুদ্ধে নজর দেয়ার মত অবস্থানে ছিল না।

রাশিয়া: ক্ষয়িঞ্চু শক্তি রক্ষার চেষ্টা
পরাশক্তি রাশিয়া ১৯২০ সালের দিকে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের সময় মধ্য এশিয়ার সব দেশ সামরিক ও জনশক্তির জোরে দখল করে নেয়। ওই সময়ই ককেসাসের আজারবাইজান, আর্মেনিয়া ও জর্জিয়াও দখল করে নিজ সাম্রাজ্য ভুক্ত করে নিয়েছিল। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে। সোভিয়েতের পতনের পরও এই অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব অব্যাহত রয়েছে। এই অঞ্চল বলতে গেলে এখন তাদের একচ্ছত্র অস্ত্রের বাজার। অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছে রাশিয়া। এই অঞ্চলে কিছু হলে তারাই নিজের প্রভাব খাটিয়ে মীমাংসা করে। তবে এই প্রভাব এখন ধীরে ধীরে কমে আসছে। আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধেও তা দেখা গেছে। এবারই প্রথম তুরস্ককে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নাগার্নো-কারাবাখে তুরস্ককে যৌথ শান্তি বাহিনীতে নিয়েছে। উভয় শক্তি এক সাথে যুদ্ধ বিরতি তদারকি করছে।

লেখক পরিচিতি : যুক্তরাজ্যপ্রবাসী; লেখক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান : সফলতার রহস্য


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us