আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধে তুরস্কের লাভ

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Dec 18, 2020 03:42 pm
রজব তাইয়েব এরদোগান

রজব তাইয়েব এরদোগান - ছবি : সংগৃহীত

 

আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক যুদ্ধে আজারবাইজানের বিপুল সাফল্যের পেছনে ছিল তুরস্কের সর্বাত্মক সহযোগিতা। কয়েক বছর ধরেই আজারবাইজানি বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে গড়ে তুলছিল তুরস্ক। তাছাড়া অস্ত্র পাওয়ার জন্য ইসরাইল ও রাশিয়ার সাথেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এই সুসম্পর্কের কারণেই যুদ্ধের সময় আজারবাইজানের বিরোধিতা করেনি দেশ দুটি। আর্মেনিয়ার সাথে রাশিয়ার সামরিক চুক্তি ছিল। কিন্তু তবুও রাশিয়া বলে দিয়েছে, আর্মেনিয়ার মূল ভূখ- আক্রান্ত হলেই কেবল তারা ওই চুক্তি অনুযায়ী সহায়তা করতে পারে। রাশিয়া প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে নাগার্নো-কারাবাঘ হলো আজারবাইজানের ভূমি। ফলে সেখানে যুদ্ধ হলে রাশিয়া কোনো ভূমিকা পালন করবে না। অবশ্য শেষ মুহূর্তে রাশিয়া সামনে এসে আর্মেনিয়াকে আরো বড় ধরনের অপমানজনক অবস্থা থেকে রক্ষা করেছে।

তবে এসবের পেছনে প্রধান খেলোয়াড় ছিল তুরস্ক। তুরস্কের কারণেই রাশিয়া যুদ্ধে আর্মেনিয়ার পক্ষে যোগ দেয়নি, তা বলাই বাহুল্য।

যুদ্ধের আগেই সামরিক ড্রোন ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করে রেখেছিল তুরস্ক। এমনকি যুদ্ধ শুরুর কয়েক দিন আগে যৌথ সামরিক মহড়ার নামে আজারবাইজানে এফ-১৬ জঙ্গি বিমান, ড্রোনও নিয়ে আসা হয়। পরিকল্পনা ছিল যে অন্য কোনো দেশ আর্মেনিয়ার সমর্থনে এগিয়ে এলে তুরস্ক সরাসরি যুদ্ধে নামবে। কোন কোন দেশ আর্মেনিয়ার সমর্থনে এগিয়ে আসতে পারে, সে সম্পর্কে তুরস্কের পরিষ্কার ধারণা ছিল। বিশেষ করে ম্যাক্রোঁর ফ্রান্স ও রাশিয়ার এগিয়ে আসার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুর্কি কূটনীতির কারণে তারা আর্মেনিয়ার সমর্থনে এগিয়ে আসতে পারেনি।

এই যুদ্ধে তুরস্ক বেশ কয়েকটি দিক থেকে লাভবান হয়েছে। প্রথমত, এর মাধ্যমে তুরস্কের নতুন উত্থানের স্বীকৃতি পাওয়া গেছে। তুর্কি অস্ত্র ও সামরিক কৌশল সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত হচ্ছে। সারা দুনিয়াই তুর্কি সক্ষমতা বুঝতে পেরেছে। তুর্কি অস্ত্র সম্ভার, বিশেষ করে ড্রোনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। আর এর বিক্রি বাড়া মানে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া।

শান্তিচুক্তির আওতায় নাকচিবানের সাথে আজারবাইজানের মূল ভূখণ্ডের সংযোগ স্থাপন করতে দিতে রাজি হয়েছে আর্মেনিয়া। এই সংযোগ সড়ক তুরস্কও ব্যবহার করতে পারবে। এর মাধ্যমে তুর্কীয় ভাষাভাষী অন্যান্য অঞ্চল- বিশেষ করে উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তুর্কমেনিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের সাথে তুরস্ক সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে। এসব দেশের সাথে তুরস্কের বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বেড়ে যেতে পারে। উসমানিয়া খিলাফতের আমলে এসব দেশ ছিল তুরস্কের অংশবিশেষ। এত দিন কয়েক হাজার মাইল ঘুরে জর্জিয়ার মাধ্যমে এসব দেশের সাথে বাণিজ্য করত তুরস্ক। ফলে তা ছিল ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।

আজারবাইজান থেকে জ্বালানি আমদানি বাড়িয়ে রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে পারবে তুরস্ক। আবার তুরস্কের সাথে মিলে অভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করতে পারবে আজারবাইজান। তুরস্কের সাথে থেকে আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে আজারবাইজানের উত্থান হবে।

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us