বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর : যা বললেন হেফাজতের নেতারা

অনলাইন প্রতিবেদক | Dec 10, 2020 02:15 pm
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর : যা বললেন হেফাজতের নেতারা

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর : যা বললেন হেফাজতের নেতারা - ছবি : নয়া দিগন্ত

 

কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর করার ঘটনার তদন্তে হেফাজত ইসলামের নেতা মামুনুল হক ও ফয়জুল করিমের নাম জড়িত থাকলেও তা সম্পূর্ণ সাজানো ও যড়যন্ত্রমূলক বলে উল্লেখ করেছে দলটি।

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বক্তব্য তুলে ধরেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। নায়েবে আমির মাওলানা নূরুল ইসলামের পক্ষে তিনি এ বক্তব্য তুলে ধরেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং আমীরে হেফাজতসহ শীর্ষ আলেম-উলামার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম।

এক প্রশ্নের উত্তরে নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছি। এটা সাজানো হয়েছে।

"ফুটেজে চিকন মানুষ দেখা গেলেও ধরে হয়েছে মোটা আকৃতির মানুষকে। ওঠার ফুটেজ আছে, নামার নেই। ৩ তারিখের ঘটনা আর ফুটেজ ৫ তারিখের। ছবিতে কারো দাড়ি নেই, আর যাদের ধরা হয়েছে তাদের দাড়ি আছে। পুলিশ তাদের তদন্ত করুক আমরা আমাদেরটা করবো"।

নুরুল ইসলাম বলেন, হেফাজত ইসলাম এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেয় না।

তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে শীর্ষ ওলামায়ে কোরামের পক্ষ থেকে কোনো প্রাণী নিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ইসলাম সর্বসম্মত নয় বলে ফতেয়া প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ফতোয়াকে অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, একমাত্র আদালতই মুসলিম বা অন্য কোনো আইন অনুযায়ী আইনসংক্রান্ত কোনো প্রশ্নে মতামত দিতে পারেন। কেউ ফতোয়া দিলে তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হবে।

এই বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ২০১১ সালে রায় পরিবর্তন হয়েছে আর সেক্ষত্রে কিছু কিছু বিষয়ে ফতেয়া দেয়া যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সরকারের সাথে আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ভাস্কর্যের বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আশা করি খুব শিগগিরই আমরা একটা আলোচনা করতে পারবো।

তাদের বক্তব্য থেকে আক্রমণাত্মক কথা বলা হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা এখন আর এমন কোনোভাবে কথা বলবেন না বা তারা সবসময়ই শান্তভাবে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
যদিও তাকে প্রশ্ন করার সময় একটু উত্তেজিত হতে দেখা যায়।

কুষ্টিয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার চান কিনা প্রশ্নে তিনি পাশের বক্তার কাছ থেকে মাইক নিয়ে বলেন, তারা সুষ্ট বিচার এর বিষয়ে কিছু জানেন না আর সেটা তাদের জানার বিষয়ও না।

"বিচার হবে, আমরা বিচারের বিপক্ষে না। তদন্ত হলে দেখা যাবে"।

তাদের দুই নেতার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিষয়ে তিনি জানান, তারা আইনগত ভাবে মামলা মোকাবিলা করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজত ইসলামের মহাসচিব নূর হোসেন কাসেমী বলেন, ভাস্কর্য আর ছবি এক না।

বিভিন্ন প্রোগ্রামে তাদের ছবি নেয়া হয়, ভিডিও দেয়া হয় এটা কি শরীয়ত সম্মত কিনা এই উত্তরে তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা করা যাবে। কিন্তু ভাস্কর্যের সাথে মেলানো যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক উপস্থিত থাকলেও তিনি মূল মঞ্চের বাইরে বসেন ও চুপ থাকেন।

লিখিত বক্তব্য নুরুল ইসলাম বলেন, সরকারকে ইসলামের আকিদা, ঈমান ও শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

আরো বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গভীর যড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও জননেত্রী পরিষদ থেকে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা সূদুর প্রসারী চক্রান্তের আলামত।


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us