করোনা চীনের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে?
করোনা চীনের জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে? - ছবি সংগৃহীত
দ্রুত ধাক্কা সামলে নিতে পেরেছে চীন। করোনাভাইরাসের ফলে লকডাউন ও বিদেশে রফতানি কার্যত বন্ধ হওয়ার ফলে চীনের অর্থনীতিতেও প্রবল ধাক্কা লাগে। কিন্তু সেই করোনার কল্যাণেই আবার সামলে উঠেছে চীন। বিদেশে ঢালাও পিপিই সহ স্বাস্থ্য সরঞ্জাম এবং ইলেকট্রনিক্সের জিনিস সরবরাহ করছে তারা। কারণ, করোনার ফলে সব দেশেই এই সব জিনিসের চাহিদা বহুগুণে বেড়েছে।
নভেম্বরে চীনের রফতানি ২১ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত তিন বছরের মধ্যে সর্বাধিক। ফলে চীনের অর্থনীতির কাছে করোনা এখন নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে। সব মিলিয়ে আমদানি বেড়েছে সাড়ে চার শতাংশ, বৈদেশিক বাণিজ্য বেড়েছে ১৩ দশমিক ছয় শতাংশ। ট্রেড সারপ্লাস সাত হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। ১৯৮১ সালের পর থেকে এতটা লাভ কখনো হয়নি।
আসলে চীন দ্রুত করোনার মোকাবিলা করে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। কিন্তু বিশ্বের অন্য দেশগুলিতে তা হয়নি। বাকি সব দেশই এখনো করোনার মোকাবিলা করে যাচ্ছে। চীনের এই বাণিজ্যিক রমরমার কারণ, সব দেশেই মাস্ক, পিপিই, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধের চাহিদা বহুগুণ বেড়েছে। সেই সব জিনিস সরবরাহ করছে চীন। অধিকাংশ দেশেই মানুষ এখন ঘরবন্দি। তাই ইলেকট্রনিক্স জিনিসের চাহিদা অনেক বেড়েছে। ফলে চীনা কোম্পানিগুলির রমরমা। আর এই কোম্পানিগুলো সরকারের কাছ থেকে করোনার পরে প্রচুর অর্থ ঋণ হিসাবে পেয়েছে। ফলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হয়েছে।
এর ফলে চীনের অর্থনীতি এ বার দুই শতাংশের বেশি বৃদ্ধি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাকি সব দেশের অর্থনীতিতে বৃদ্ধি যখন নেতিবাচক, তখন চীন সেখানে ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে।
তবে চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য সম্পর্ক এ বার কী দাঁড়াবে তা পরিষ্কার নয়। ডনাল্ড ট্রাম্প চীন-বিরোধী নীতি নিয়ে চলেছিলেন। বাইডেন এসে কি সেই নীতি বদলাবেন? মার্কিন-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটাই এখন সব চেয়ে বড় প্রশ্ন।
নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে তুরস্কের উপর
ভূমধ্যসাগর বিতর্কে নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে তুরস্কের ওপর। এ বিষয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নে বসতে পারে বৈঠক। ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এ বৈঠকে তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
ভূমধ্যসাগরের একটি অংশে মিলেছিল খনিজ তেলের সন্ধান। মূলত ওই তেলের খনি নিয়েই গত অগাস্ট মাস থেকে বিতর্ক চলছিল গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে। কীভাবে ওই তেল উত্তোলন করা সম্ভব তা দেখার জন্য জাহাজ পাঠিয়েছিল তুরস্ক। গ্রিস খনিজ তেলের সন্ধান পাওয়া এলাকাটি তাদের দাবি করে তুরস্কের জাহাজ দ্রুত সরিয়ে নিতে বলে। তবে গত চার মাসে কেবল একবারই ভূমধ্যসাগরের ওই এলাকা থেকে তুরস্ক তাদের জাহাজ সরিয়েছিল। পরে আবার তারা ওই এলাকায় তাদের জাহাজ পাঠায়। এ বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, তেল উত্তোলনের পরীক্ষা অব্যাহত থাকবে। কারো নিষেধ তুরস্ক মানবে না, কারণ ওই এলাকা গ্রিসের নয়।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘ দিন ধরেই ওই বিতর্কে অংশগ্রহণ করে আসছে। ওই সময় গ্রিসের পাশাপাশি তারাও জাহাজ সরিয়ে নিতে তুরস্ককে অনুরোধ করে আসছিল। কিন্তু তুরস্ক তাতে কর্ণপাত করেনি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চেষ্টা করেছিল গ্রিস, তুরস্ক ও সাইপ্রসকে একসাথে বসিয়ে বৈঠক করার, কিন্তু ওই চেষ্টা সফল হয়নি। এ পরিস্থিতিতেই সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
তবে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আগামী ১০ ডিসেম্বর এ বিষয়ে আবারো বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। ওই বৈঠকে যেকোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে। তবে ফ্রান্স চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করুক।
এ দিকে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে তুরস্কের সাথে অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ হতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের। নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে তেল ও খনিজের উপরেও।
সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, গ্রিসের সাথে বৈঠকে বসতে তিনি রাজি। ইউরোপীয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষটিকে অন্ধের মতো দেখছে।
বিতর্কটি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে আচরণ করছে তা আশাব্যঞ্জক নয়।
সূত্র : ডয়চে ভেলে