পুরোপুরি সারানো সম্ভব শ্বেতি

ডা. প্রিয়াঙ্কা আগরওয়াল | Dec 07, 2020 03:18 pm
পুরোপুরি সারানো সম্ভব শ্বেতি

পুরোপুরি সারানো সম্ভব শ্বেতি - ছবি সংগৃহীত

 

শরীরের যেকোনো স্থানের ত্বকেই একটু দাগ-ছোপ মানেই মন খুঁতখুঁত। আর মুখে ছোট ক্ষত হলেই ওই খুঁতখুঁতানি দ্বিগুণ। সমস্যা যদি শ্বেতি হয়, তবে তো চক্ষু চড়ক গাছ। এত ভয়ের কারণ, এই রোগ একবার হলে তা সারাজীবনের সঙ্গী। আর শরীরের অন্যান্য অঙ্গের থেকেও মুখে এই দাগ হলে তো কথাই নেই, সৌন্দর্যের অমাবস্যা! যা রোগীকে সবসময় একটা হীনমন্যতায় ভোগায়। শরীরের পাশাপাশি মনের উপরও এই অসুখের প্রভাব মারাত্মক। শ্বেতির সমস্যা থেকে মুক্তির যেসব চলতি উপায় রয়েছে তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেদনাদায়ক, বা সময়সাপেক্ষ অথবা খুব জটিল। তবে এখন এই শহরেই কম খরচে, খুব কম সময়ে সারা জীবনের জন্য এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শ্বেতি রোগটা আসলে কী?

আমাদের শরীরের ত্বকের রং ধরে রাখে ত্বকে উপস্থিত মেলানিন নামক রঞ্জক। যেটা তৈরি হয় মেলানোসাইট নামক কোষ দ্বারা। এই কোষগুলো যখন কোনো কারণে এই রঞ্জক তৈরি করতে পারে না বা করে না তখন ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় সাদা সাদা দাগ বা শ্বেতির উৎপত্তি দেখা দেয়। সারা বিশ্বে ০.১ – ২% লোক এই রোগে ভোগেন। এই দাগগুলো ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।

অতীত চিকিৎসা

অত্যাধুনিক চিকিৎসা আরম্ভ হওয়ার আগে যে সার্জিক্যাল চিকিৎসাগুলো করা হতো তা হলো-

স্কিন গ্রাফটিং- সুস্থ জায়গার চামড়া নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় একটু ক্ষত করে বসানো।
সাকশন ব্লিসটার গ্রাফটিং- সুস্থ জায়গার চামড়ায় কৃত্রিমভাবে ফোসকা বানিয়ে সেখান থেকে ওই ফোসকার উপরের চামড়াটা কেটে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় বসানো।
মিনি/পাঞ্চ গ্রাফটিং- ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় ছোট ছোট ফুটো করে ৩ মিমি থেকে ৪ মিমি এর দূরত্বে গ্রাফটিং করা।

নতুন চিকিৎসা

এই চিকিৎসা দু’ রকমের হয়-

কালচার মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লানটেশন
নন কালচার মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লানটেশন
এই দুটির মধ্যে সব চেয়ে ভাল উপায় হল নন কালচার মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লানটেশন।

নন মেলানোসাইট ট্রান্সপ্লানটেশন

এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর ১০ সেমি স্কোয়্যার চামড়া থেকে ১০০ সেমি স্কোয়্যারের ক্ষেত্রফলের চিকিৎসা সম্ভব এবং সেটাও কিন্তু মাত্র একটা সিটিংয়েই (১-৩ ঘণ্টায়) করে ফেল যায়। কিন্তু শর্ত একটাই- শ্বেতি যেন গত এক বছরে একই থাকে, কোনো ভাবে বাড়লে এই চিকিৎসা করা যাবে না। যদিও এই শর্ত আগে যে সার্জিক্যাল চিকিৎসাগুলো ছিল সেইক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তবে শ্বেতি একবার শুরু হলে সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়তে থাকে। এই স্টেবেল অবস্থায় আনার জন্য কিছু ওষুধ দেয়া হয় যেগুলো হলো ইমিউনো-সাবপ্রেসেন্ট।

এই নতুন চিকিৎসার সুবিধাগুলো হলো-

* একটি ছোট জায়গা (১০ সেমি স্কোয়্যার) চামড়া থেকে লক্ষ লক্ষ মেলানোসাইট নিয়ে অনেকটা বড় জায়গা (১০০ সেমি স্কোয়্যার) চিকিৎসা করা যায়।

* বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক সিটিংয়ে ১-৩ ঘণ্টার মধ্যে পুরো চিকিৎসা করে ফেলা সম্ভব।
* ত্বকের সুস্থ স্বাভাবিক রং এবং গঠনের মিল এই চিকিৎসার করে সবচেয়ে বেশি ফিরে পাওয়া সম্ভব।
* বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লোকাল অ্যানাস্থিসিয়া দিয়ে অপারেশন করা হয়।
* এর জন্য আলাদা করে কোনো কালচার ল্যাবরেটরি দরকার পড়ে না (যে কারণে খরচ কম), এবং এই * চিকিৎসার ফলাফল অনেক ভালো। খরচ- ৭-১০ হাজার টাকা।
* ৯০-৯৪% ক্ষেত্রে রোগ সম্পূর্ণভাবে নিরাময় হয়ে যায়।
* বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে পুরোপুরি স্বাভাবিক ত্বক ফিরে পাওয়া যায়।

সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us