আবার ডায়ানা : ক্ষোভের মুখে ব্রিটিশ রাজপরিবার
ডায়ানা - ছবি সংগৃহীত
আবার বিতর্কের কেন্দ্রে প্রিন্সেস ডায়ানা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটফ্লিক্সের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে দেয়া একটি ডকুমেন্টারি ও ভিডিও ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। যা নিয়ে হইচই পড়ে গেছে নেট-দুনিয়ায়। কার্যত বিদ্বেষের বন্যা বয়ে গেছে ব্রিটেনের রাজপরিবারের বিরুদ্ধে। যার থেকে রেহাই পাননি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, যুবরাজ চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা পার্কারও। যার প্রেক্ষাপটে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজপরিবার।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটফ্লিক্সের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে দেয়া ওই ডকুমেন্টারি ও ভিডিওয় তুলে ধরা হয়েছে প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ডায়ানার ভেঙে যাওয়া দাম্পত্য, প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে ‘ডাচেস অফ কর্নওয়াল’ ক্যামিলার প্রণয়, ডায়ানা সম্পর্কে রাজপরিবারের মনোভাবের মতো বহু বিতর্কিত বিষয়। কোনো রাখঢাক না রেখেই।
ওই ভিডিওতে ডায়ানাকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘একটি পার্সেল খুলে দেখি তার মধ্যে রয়েছে একটা ব্রেসলেট। শুনি চার্লস সেটা উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছিলেন তার প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কার বোলসকে। সেটা দেখেই আমি পুরোপুরি ভেঙে পড়ি।’’
ভিডিওর আরেকটি অংশে প্রিন্সেস ডায়ানাকে বলতে শোনা গেছে, ‘‘ও (চার্লস) যেন আমার মাথাটাই সে দিন কেটে ফেলেছিল। এত রেগে গিয়েছিলাম সে দিন। কতটা ঠকে গিয়েছি ভেবে ঠান্ডায় যেন জমে গিয়েছিলাম। অবশ হয়ে পড়েছিলাম।’’
শুধু ডায়ানার বক্তব্যই নয় ভিডিও ও ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরা হয়েছে চার্লস-ডায়ানার ভেঙে যাওয়া দাম্পত্য নিয়ে সমালোচকদের মন্তব্যও। সেখানে অনেকেই কোনো রাখঢাক না রেখে ওই দাম্পত্য ভেঙে যাওয়ার জন্য ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপ ও রাজপরিবারের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
তাকে কী ভাবে ঠকানো হয়েছিল, ভিডিওয় তারও বর্ণনা দিতে শোনা গিয়েছে ডায়ানাকে। প্রিন্সেস ডায়ানা বলেছেন, ‘‘ক্যামিলা আমাকে বলল ও চার্লসের সঙ্গে শিকারে যেতে চায়। আমি কিছু না বুঝেই ওদের অনুমতি দিয়েছিলাম। ক্যামিলাকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলাম। ভাবিনি পরে আমাকে ঠকতে হবে।’’
চার্লসকে বিয়ে করার আগে যে তিনি অন্য রকমও ভেবেছিলেন, ভিডিও ও ডকুমেন্টারিতে সে কথাও কবুল করতে দেখা গেছে ডায়ানাকে। যুবরানি বলেছেন, ‘‘আমি বোনদের বলেছিলাম ওকে (চার্লস) বিয়ে করাটা বোধহয় আমার উচিত হচ্ছে না।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ডকুমেন্টারি আর ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই রাজপরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু হয়ে যায় নেটিজেনদের। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, যুবরাজ চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা পার্কার কেউই রেহাই পাননি সেই বিষোদ্গারের হাত থেকে।
এই সবের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ রাজপরিবারের অন্দরমহলের এক সদস্য বলেন, ‘‘খুব অপ্রীতিকর ঘটনা চলছে। নাটক করার চেষ্টা চলছে। যদিও নাট্যকারের দাবি তিনি তথ্যনির্ভর হয়েই এই সব লিখেছেন। কিন্তু এই সব একেবারেই একপেশে। অন্য পক্ষের বক্তব্য সেখানে জায়গা পায়নি। এটা খুবই অশুভ।’’
বিষয়টি নিয়ে রাজপরিবারের অসন্তোষের কথা তিনি হাউস অফ লর্ডসে তুলবেন, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকেও বলবেন বলে জানিয়েছেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা