কোথায়-কখন মাস্ক পরতেই হবে?
কোথায়-কখন মাস্ক পরতেই হবে? - ছবি : সংগৃহীত
দূরত্ব বজায় রাখা, সাবান-স্যানিটাইজার একাধিক বার ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত থাকা এবং মাস্ক ব্যবহার করা-- এই নিয়মগুলোর মাধ্যমেই টিকা-পূর্ববর্তী বিশ্ব জয় করতে পারবে করোনাভাইরাসকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বরাবরই এই নিয়মকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করার কথাই বলে এসেছে। এর পাশাপাশি নিজেদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কথাও বলেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। এই নিয়মের মাধ্যমে সংক্রমণ অনেকটাই আটকানো যায় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে করোনাভাইরাস রোধে মাস্ক ব্যবহার নিয়ে নানা মতবিরোধ রয়েছে। অনেকের মতে, স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা দিচ্ছে এই মাস্ক, অনেকের আবার অত্যধিক সময় মাস্ক ব্যবহারের ফলে ত্বকের ক্ষতি হচ্ছে, শ্বাস নিয়েও সমস্যা হচ্ছে অনেকের। বিশেষ করে শরীরচর্চার সময় মাস্ক ব্যবহার নিয়ে নানা সমস্যাও সামনে এসেছে। এতে ভালোর জায়গায় বরং দম আটকে মৃত্যুও হয়েছে অনেকের।
সম্প্রতি এই মাস্ক ব্যবহার নিয়ে নতুন গাইডলাইন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। এই গাইডলাইনে বদ্ধ ঘরের ভিতরেও মাস্ক পরার কথা বলা হয়েছে। শুধু সেন্ট্রালি এসি ঘরেই নয়, এসি গাড়িতে, ছোট ঘরেও খুব সহজেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে হু এমন পরিস্থিতিতেও মাস্ক পরার কথা বলছে। এছাড়া জনবহুল ইনডোর এলাকায় তো মাস্ক পরতেই হবে। তবে খুব টাইট মাস্ক পরতে নিষেধ করেছে হু। তবে জিমে ঘাম ঝরানোর সময় মাস্ক না পরার কথাই বলেছে হু।
জিমে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং এবং উপযুক্ত হাওয়া চলাচল হলে মাস্কের প্রয়োজন নেই। এতে অনেক ক্ষেত্রে শরীরে বিরূপ প্রভাব পড়তেও পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের। জনবহুল এলাকায় মাস্ক পরতেই হবে। যতক্ষণ সম্ভব, যতটা সম্ভভ মাস্ক পরেই থাকতে বলা হয়েছে। ৫ বছরের উপরের শিশুদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। এর নিচের শিশুরা না পরলেও চলবে। এই অভ্যেস যত তাড়াতাড়ি হবে এবং থাকবে ততই মঙ্গল এই মারণভাইরাসকে কাবু করার জন্য।
সূত্র : আজকাল
দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭৭২
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ২৪ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬ হাজার ৭৭২ জনে।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, একদিনে নতুন করে ২ হাজার ২৫২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯১ জনে পৌঁছেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ ল্যাবে নমুনা সংগ্রহ করা হয় ১৫ হাজার ৫২৭টি। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৪৩০টি। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা হলো ২৮ লাখ ৩৬ হাজার ৪১১টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৪.৫৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬.৭১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৪৩ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ২ হাজার ৫৭২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৯৫১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮২ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২৪ জনের মধ্যে ২০ জন পুরুষ এবং নারী চারজন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বিশ্ব পরিস্থিতি :
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫ লাখ ৪ হাজার ৪৪৩ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ৩১৭ জনে।
জেএইচইউ’র তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস থেকে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ কোটি ১৮ লাখ ৬২ হাজার ২৩৬ ব্যক্তি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চলতি বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ পর্যন্ত দেশটিতে ১ কোটি ৪১ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত রয়েছে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে এবং মৃত্যু নিয়ে আছে তৃতীয় অবস্থানে। ব্রাজিল আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকলেও সর্বাধিক মৃতের সংখ্যার দিক থেকে ল্যাটিন আমেরিকার দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।