সৌদি আরবের আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত
সৌদি আরবের আরো ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত - ছবি : সংগৃহীত
সৌদি আরবের সঙ্গে নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষাগত সমঝোতা বাড়াচ্ছে ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে দু’দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম যৌথ নৌমহড়াও হয়ে গেছে বলে সূত্রের খবর। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত সৌদ মোহাম্মদ আল-সাতি সম্প্রতি জানিয়েছেন, ‘এই দশকে ভারত এবং সৌদির মধ্যে সম্পর্কের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার কৌশলগত সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে। শক্তিক্ষেত্র, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য পরিষেবা সব দিকেই বর্ধিত হয়েছে সহযোগিতা।’
শুক্রবার কলকাতাভিত্তিক আনন্দাবাজার পত্রিকায় এ নিয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটিতে বলা হয়, ইসলামি সম্মেলন সংস্থা ওআইসি তথা বর্তমান ইসলামিক বিশ্বে অন্যতম প্রভাবশালী দেশ সৌদির সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ানো মোদি সরকারের কাছে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের মতে, ইরান এবং আরব বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো এখন পরস্পর দুই মেরুতে দাঁড়িয়ে। ইসরাইলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সৌদি বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো রাষ্ট্রগুলো ইরানকে কোণঠাসা করতে মরিয়া। ২০ জানুয়ারি জো বাইডেন কুর্সিতে বসার পর ইরানের সঙ্গে ভেঙে যাওয়া পরমাণু চুক্তি যাতে আবার জোড়া না লাগান, তার জন্য একই ভাবে সক্রিয় আরব ও ইসরাইল।
সম্প্রতি তেহরানের কাছেই ইরানের এক জন প্রধান পরমাণু বিজ্ঞানীকে খুন করা হয়েছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, এটি রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ। যদি এই হত্যার প্রতিক্রিয়ায় চরমপন্থা নেয় ইরান, তা হলে আমেরিকা এবং ইসরাইলের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হবে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে তেহরানের পরমাণু চুক্তির সম্ভাবনাও বিনষ্ট হবে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ভারতের কাছে সৌদির গুরুত্ব বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত ভাবে যথেষ্ট। মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতির একমাত্র সাফল্য পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে দৌত্য, এমনই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভারত ঐতিহ্যগত ভাবে কখনই কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক অন্য কোনো রাষ্ট্রের বিনিময়ে গড়তে চায়নি। আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সংঘাতের মধ্যেও ইরানের সঙ্গে জোরালো সমন্বয় বজায় রেখেছে নয়াদিল্লি। শক্তিক্ষেত্রে নির্ভরতা তো রয়েছেই। ইরানের চাবাহার বন্দরের গুরুত্বও যথেষ্ট ভারতের কাছে।
এতে বলা হয়েছে, তবে শুধু সৌদির সঙ্গে শত্রুতা নয়, ইরান এখন যোগ দিয়েছে তুরস্কের সঙ্গেও, যারা কট্টর রাজনৈতিক ইসলামের চর্চা করে থাকে। পাকিস্তানের ইমরান সরকারও তুরস্কের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাশ্মীর নিয়ে তোপ দাগতে চাইছে বারবার। ফলে ইরান এবং আরবের মধ্যে কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে চলা এখন ভারতের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী সপ্তাহে ভারতের সেনাপ্রধান মনোজ মুকুন্দ নরবণে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে যাচ্ছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে যখন সৌদি আরবের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে, তখন পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সামরিক সম্পর্কের উন্নতি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা