২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনেক কিছু হবে : ট্রাম্প
২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনেক কিছু হবে : ট্রাম্প - ছবি : সংগৃহীত
স্বীকারোক্তির কাছাকাছি পৌঁছলেন। তবু স্বীকার করলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানিয়ে দিলেন, বাইডেনের নিজের হার মানবেন একটি শর্তে। কী সেই শর্ত? ইলেক্টোরাল কলেজকে সরকারিভাবে ঘোষণা করতে হবে, যে বাইডেনই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
৩ নভেম্বর ভোট হয়েছে আমেরিকায়। তার পর থেকে আর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি ট্রাম্প। টুইটারে ক্ষোভ জানিয়েছেন। বারবার দাবি করেছেন, ভোটে জালিয়াতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন তিনি। জানালেন, হার স্বীকারের শর্ত। একমাত্র ইলেক্টোরাল কলেজ বাইডেনের জয় ঘোষণা করলেই হোয়াইট হাউস ছাড়বেন তিনি।
আর যদি ইলেক্টোরাল কলেজ বলে, ‘যে ভুল হয়েছে, তাহলে হার স্বীকার করা খুব কঠিন হবে।’ তার মতে, ‘এখন থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনেক কিছু হবে।’ এই স্বীকারোক্তির পরেও তোপ দাগতে ছাড়লেন না ট্রাম্প। বললেন, ‘এই নির্বাচন পুরোটাই জাল।’ আমেরিকার ভোটের পরিকাঠামো ‘তৃতীয় বিশ্বের মতো’ বলতেও ছাড়লেন না।
যদিও বৃহস্পতিবার সকালে টুইটারেও একই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘এই নির্বাচনে ১০০ শতাংশ রিগিং হয়েছে।’ ১৪ ডিসেম্বর বৈঠকে বসবে ইলেক্টোরাল কলেজ। সেদিনই সরকারিভাবে ঘোষণা করা হবে আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্টের নাম।
ট্রাম্পের আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার তার সমর্থকদের বলেছেন, মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিতে তাদেরকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। তিনি দাবি করেন, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের বিজয় নিশ্চিত করতে এ নির্বাচনে ‘জালিয়াতি’ করা হয়েছে। পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান সমর্থকদের উদ্দেশে টেলিফোনে ট্রাম্প বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে।’ এ নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে বাইডেনের জয়লাভের তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর ট্রাম্প তার সমর্থকদের প্রতি এমন আহ্বান জানালেন। ট্রাম্প বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘এ নির্বাচন জালিয়াতিপূর্ণ ছিল।’
অপর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার উদ্যোগের পক্ষে আমেরিকানরা দাঁড়াবে না। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন বুধবার এ কথা বলেন।
থ্যাংকস গিভিং হলিডে’র প্রাক্কালে নিজ শহর উইলমিংটনে এক বক্তব্যে বাইডেন বলেন, আমেরিকানরা সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করেছে এবং পরে আমরা এর ফলাফলকে সম্মান করেছি। তিনি বলেন, এই দেশের জনগণ ও দেশের আইন ছাড়া অন্য কোনো কিছুর পক্ষে দাঁড়াবে না। গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর থেকে ট্রাম্প একের পর এক জালিয়াতির অভিযোগ তুলছেন। যদিও এসব অভিযোগের পক্ষে তিনি অর্থপূর্ণ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া পেনসিলভেনিয়ায় সমর্থকদের তিনি বলেছেন, আমাদেরকে নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দিতে হবে। কারণ এতে জালিয়াতি হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেনের এ বক্তব্য ট্রাম্পের বিপক্ষে তাদের কঠোর অবস্থানেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিকে পরাজয় স্বীকার না করলেও ট্রাম্প ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়েছেন। গত সোমবার তিনি বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তর দেখভাল করা জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিএসএ) যা করণীয়, তা তাদের অবশ্যই করা উচিত। এর পর থেকে বাইডেন টিম জিএসএ’র সাথে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তাদের কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার বাইডেন তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। সে সময়ে তিনি বলেছেন, এটি এমন একটি টিম যা আমেরিকার ফিরে আসার প্রতিনিধিত্ব করে। পিছু হটা নয়; আমেরিকা এখন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।