আজারবাইজানের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিলো আর্মেনিয়া
আজারবাইজানের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিলো আর্মেনিয়া - ছবি সংগৃহীত
নাগার্নো-কারাবাগের যুদ্ধে সব দিক থেকেই আজারবাইজানের কাছে আর্মেনিয়া হেরে গেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট।
আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আরমেন সার্গসিয়ান বলেছেন, তারা আজারবাইজানের কাছে সব দিক থেকেই পরাজিত হয়েছে। তিনি সেদেশের একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আরও বলেছেন, নাগার্নো-কারাবাখ সংকটে পরাজিত শক্তি হচ্ছে আর্মেনিয়া।
তিনি আরো বলেছেন,গত কয়েক বছরে আর্মেনীয় সেনাবাহিনীকে এ ধরণের হামলা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হয়নি। সেনাবাহিনীর যেমন পর্যাপ্ত সামরিক সরঞ্জামের ঘাটতি ছিল তেমনি উপযুক্ত প্রশিক্ষণেরও অভাব ছিল।
আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধের ময়দানই কেবল আমাদের পরাজয় নির্ধারণ করেনি বরং গত কয়েক বছরে নাগার্নো-কারাবাখে জনসংখ্যা বৃদ্ধি না পাওয়াও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
আর্মেনিয়ার গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আর্মেনিয়ার গণমাধ্যম এসব ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে, তারা ফেসবুক থেকে কপি-পেস্ট ছাড়া আর কিছুই পারে না। তিনি বলেন, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে এবং দ্রুত আগাম নির্বাচন দিতে হবে।
সম্প্রতি তিনি এক সমাবেশে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিবৃতি সইয়ের ক্ষেত্রে তার কোনো ভূমিকা ছিল না। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এর সঙ্গে জড়িত।
কারাবাখ অঞ্চলে তিন সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে গত ৯ নভেম্বর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি সই করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। ওই চুক্তি অনুযায়ী শুক্রবার আজারবাইজানের সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে কারাবাখের আগদামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
কারাবাখের কালবাজারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিল আজারবাইজান
নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলের আরো একটি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আজারবাইজানের সেনাবাহিনী। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া সম্প্রতি পুর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতির জন্য যে চুক্তি সই করেছে তার আওতায় কালবাজার নামে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিলো আজেরি বাহিনী।
আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আজ (বুধবার) এক বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, কালবাজার এলাকায় আজেরি সেনাদের নির্বিঘ্ন চলাচলের জন্য ওই এলাকায় পেতে রাখা মাইন এবং বোমা পরিষ্কার করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের উপদেষ্টা হিকমত হাজিয়েভ জানান, কালবাজার শহরটি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আর্মেনিয়ার সরকার যে ১০ দিন বাড়তি সময় নিয়েছিল তা শেষ হওয়ার পর আজ শহরটি হস্তান্তর করা হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকের শুরু দিকে আজারবাইজানের কাছ থেকে এসব এলাকা আার্মেনিয়া দখল করে নিয়েছিল।
ইরানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ নাগরনো-কারাবাখ বিরোধে ইরান যে অবস্থান নিয়েছে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। গতকাল (শুক্রবার) কারাবাখ অঞ্চলের আগদাম শহরে আজারি সেনা মোতায়েন উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে ইরানের প্রতি এ কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি বলেন, ইরান আজারবাইজানের বন্ধু ও ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ। কয়েকদিন আগেও আলিয়েভ কারাবাখ অঞ্চলের পুনরুদ্ধার হওয়া এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ইরান-আজারবাইজান সীমান্তকে ‘বন্ধুত্বের সীমান্ত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী সম্প্রতি নাগরনো-কারাবাখ সংকট প্রসঙ্গে এক ভাষণে বলেন, আর্মেনিয়ার হাতে দখলীকৃত সমস্ত ভূখণ্ড আজারবাইজানকে ফেরত দিতে হবে। একইসঙ্গে তিনি জাতিগত আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা রক্ষা এবং দু’দেশের মধ্যকার আন্তর্জাতিক সীমান্ত রক্ষা করারও আহ্বান জানান।
কারাবাখ অঞ্চলে তিন সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে গত ৯ নভেম্বর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি সই করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। ওই চুক্তি অনুযায়ী শুক্রবার আজারবাইজানের সেনাবাহিনী কারাবাখের আগদাম শহরে প্রবেশ করে।
সূত্র : পার্স টুডে