বাদামে এত উপকার!
বাদাম - ছবি সংগৃহীত
বাদাম একটি অতি পরিচিত খাদ্য। সস্তা, উপাদেয় ও যথেষ্ট পুষ্টিকর। আমাদের বেলে মাটি অধ্যুষিত নদী অববাহিকা এলাকায় বাদামের চাষাবাদ হয়। আমরা প্রায় সবাই অহরহই বাদাম কমবেশি খেলেও বাদামের পুষ্টিমান সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নগণ্য। বাদামে প্রচুর স্নেহ, শর্করা ও আমিষ থাকে।
বাদাম একটি সুস্বাদু ও সহজলভ্য খাদ্য। যেসব শিশু আমিষের অভাবজনিত সমস্যায় ভুগছে, তাদের প্রতিদিন অর্ধেক থেকে এক কাপ বাদামের দুধ প্রতিদিন খাওয়ালে আমিষের অভাব থেকে তাদের রক্ষা করা যেতে পারে। স্কুলের ছাত্রাবাস বা এতিমখানায় এটি একটি ভালো আমিষের উৎস হতে পারে। ভালো মিছরির সাথে বাদাম মিশিয়ে ‘চিকিক’ নামক অত্যন্ত তৃপ্তিকর খাদ্য তৈরি হয়। বাদামে যথেষ্ট নিকোটিনিক এসিড থাকে। যাদের পেলেগ্রা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের জন্য পেলো প্রতিরোধের জন্য বাদাম খাওয়ানো যেতে পারে। বাদামের ভেতরের বাদামি রঙের আবরণটি ভিটামিন এ’র উৎকৃষ্ট উৎস। ত্বকের মসৃণতার ব্যাপারে সচেতন নারী ও পুরুষরা প্রতিদিন কিছু পরিমাণ বাদাম খেতে পারেন।
বাদামের তেল রান্না, পিঠা তৈরি ও সৌন্দর্যচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে শতাব্দী ধরে। বাদামের তেল থেকে বনস্পতি ঘি তৈরি হয়। যে শিশুদের মায়ের দুধ বা গাভীর দুধ হজম হয় না, একজিমা আছে বা আন্ত্রিক পাকস্থলী ও অন্ত্রে আলসার আছে তাদের জন্য বাদামের দুধ একটি উত্তম খাদ্য। বাদামের দুধে ২২-২৮ শতাংশ আমিষ এবং ৪২ থেকে ৫০ শতাংশ তেল থাকে। এতে যথেষ্ট ভিটামিন-বি১, সিয়াসিন, ভিটামিন, বি২ এবং প্যানটোথেনিক আছে।
এ ছাড়া পেশতা বাদাম, আখরোট, কাজু বাদাম ও কাঠ বাদাম ইত্যাদিতেও প্রচুর গ্লুকোজ ও আমিষ আছে। কিন্তু এগুলো দামি হওয়ার কারণে বিত্তবানদের কাছে বেশি আদৃত হয়ে আসছে
বাদামের উপকারিতা দেখে নেয়া যাক একনজরে-
* বাদামে প্রোটিন ভরপুর থাকে। যা কি না দেহকোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শিশুদের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাদামের ভূমিকা অনেকটা। এর মধ্যে দুধের গুণাগুণও থাকে অনেকটা। তাই কেউ যদি দুধ খেতে না পারেন সে ক্ষেত্রে বাদাম বিকল্প হতে পারে।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি বাদামেও পাওয়া যায়। যা শীতে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন বাদাম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং শরীর ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়।
* বাদাম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি বাদামেও পাওয়া যায়। যা শীতে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন বাদাম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং শরীর ভেতর থেকে শক্তিশালী হয়।
* হার্টের জন্য বাদাম খুবই উপকারী। বাদামে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং মিনারেল থাকে। যা হার্ট অ্যাটাক এবং হৃদযন্ত্রজনিত অন্যান্য সমস্যা কমিয়ে দেয়। বাদামে ট্রিপটোফ্যানও থাকে যা ডিপ্রেশন কমাতেও সাহায্য করে।
* বাদাম ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণেও অনেকটা সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ খনিজ দ্রব্য। এই খনিজ উপাদানটি ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, মেটাবলিজম, কোষে ক্যালসিয়াম শোষণ এবং ব্লাডসুগার কমাতে সাহায্য করে। স্টাডিতে দেখা গেছে ২১ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে বাদাম।
* দেহে ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে বাদাম। রক্তে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বাদামে রয়েছে ওলেয়িক অ্যাসিড। যা রক্তে ব্যাড কোলেস্টেরল কমিয়ে গুড কোলেস্টেরল বারিয়ে তোলে।
* দেহে করোনারি আর্টেরি রোগ প্রতিরোধেও বাদামের ভূমিকা অপরিসীম।
* বাদাম স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। বাদামে উপস্থিত মনোস্যাচুরেটেড অ্যাসিড ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বকে উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে।
* ক্যানসার কমানোর ক্ষেত্রেও সহায়তা করে বাদাম। বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোস্টেরলস রয়েছে, যার আরেক নাম- বিটা-সিটোস্টেরল। এই ফাইটোস্টেরল ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস