ট্রাম্পের বিদায়ে আমিরাতের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না?

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Nov 20, 2020 05:25 pm
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান - ছবি : সংগৃহীত

 

মধ্যপ্রাচ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ব্যবহারে মোটেও সন্তুষ্ট নন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। অতীতে আমিরাতের কাছে বিক্রি হওয়া অস্ত্র নানাভাবে অপরাধী গোষ্ঠীর হাতে গেছে, তাদের আরো অস্ত্র দিলে সেগুলোও বেআইনি পথে ব্যবহৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির কাছে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি স্থগিত করতে চান মার্কিন সিনেটররা।

ডেমোক্র্যাট সিনেটর বব মেনেন্ডেজ ও ক্রিস মারফি এবং রিপাবলিকান সিনেটর র‌্যান্ড পল ঘোষণা দিয়েছেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের অত্যাধুনিক রিপার ড্রোন, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবারুদসহ অন্যান্য অস্ত্র বিক্রিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে চারটি পৃথক প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন।

মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন আমিরাতের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রি করতে তাড়াহুড়োর মাধ্যমে কংগ্রেসের সাধারণ পর্যালোচনা প্রক্রিয়া অবমাননা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এসব অস্ত্র বিক্রিতে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলার উপায় সম্পর্কে তদন্তে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুসারে, সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি এবং প্রতিনিধি পরিষদের (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির হাতে অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে।

প্রভাবশালী এ মার্কিন সিনেটর বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত অতীতে অস্ত্র চুক্তি লঙ্ঘন করেছে, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিপজ্জনক সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছেছে। আর তারা লিবিয়া এবং ইয়েমেনে আন্তর্জাতিক আইন মানতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন চুক্তির অংশ হিসেবেই আমিরাতকে অত্যাধুনিক এসব অস্ত্র দিতে চেয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।

আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে আরো সেনা কমাবেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছরের মধ্য জানুয়ারির মধ্যে আফগানিস্তানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজার সেনা কমিয়ে আড়াই হাজার করা হবে। অন্য দিকে ইরাক থেকে ৫০০ সেনা কমিয়ে আড়াই হাজার করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার আগে ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে আরও সেনা প্রত্যাহার করবেন বলে ধারণা করছেন দেশটির সামরিক কর্মকর্তারা।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানান, আগামী বছরের মধ্য জানুয়ারির মধ্যে আফগানিস্তানে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ হাজার সেনা কমিয়ে আড়াই হাজার করা হবে। অন্য দিকে ইরাক থেকে ৫০০ সেনা কমিয়ে আড়াই হাজার করা হবে। এর আগে চলতি বছরের বড়দিনের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘সব’ সেনা দেশে ফেরানোর কথা বলেছিলেন ট্রাম্প।

৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করা হবে।

এ দিকে ট্রাম্পের সেনা প্রত্যাহারের এ পরিকল্পনায় বিদ্রোহীরা আনন্দিত হবে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাকক্যানেল। সোমবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ম্যাককনেল বলেন, আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষায় আমরা অল্প করে হলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছি। বিশ্বের কল্যাণে কাজ করা শক্তিশালী বাহিনীকে সরিয়ে ফেললে ওইসব বিদ্রোহীরা খুশি হবে।

বেশ কিছুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের ঘরে ফেরানোর পরিকল্পনার কথা বলে আসছিলেন ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশে সামরিক হস্তক্ষেপ ব্যয়বহুল ও অকার্যকর বলেও সমালোচনা করেছিলেন তিনি। সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থা এপি জানায়, গেল সাপ্তাহিক ছুটিতে সামরিক নেতাদের সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশ প্রস্তুত করা হয়েছে।

তবে তা এখনো কমান্ডারদের কাছে পাঠানো হয়নি। সেপ্টেম্বরে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইরাক থেকে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিল পেন্টাগন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটিতে আক্রমণ করে। এর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের সেনা দেশটিতে অবস্থান করছে।

সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি ও সিএনএন

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us