যুদ্ধে যে বিজয় পেল আজারবাইজান

অন্য এক দিগন্ত ডেস্ক | Nov 10, 2020 02:25 pm
যুদ্ধে যে বিজয় পেল আজারবাইজান

যুদ্ধে যে বিজয় পেল আজারবাইজান - ছবি সংগৃহীত

 

ছয় সপ্তাহ যুদ্ধের পর অবশেষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি হলো আর্মেনিয়া-আজারবাইজানের। আজারি প্রেসিডেন্ট চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। আর্মেনিয়ায় শুরু হয়েছে ব্যাপক বিক্ষোভ।

রাশিয়ার হস্তক্ষেপে ফের চুক্তিপত্রে সই করেছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দুই পক্ষই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তিতে 'জয়' হয়েছে আজারবাইজানের। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ''এই চুক্তি আমার এবং দেশের মানুষের পক্ষে অত্যন্ত কষ্টের। তবে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য এ চুক্তি মেনে নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।'' স্বাভাবিক ভাবেই চুক্তিটিকে স্বাগত জানিয়েছে আজারি প্রশাসন।

চুক্তিতে ঠিক হয়েছে, নাগর্নো-কারাবাখে এই মুহূর্তে যার অবস্থানে যেখানে, সে সেখানেই থাকবে। গত এক সপ্তাহে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাত থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শহর উদ্ধার করেছে আজারবাইজান। রোববার তারা রাজধানীর খুব কাছে পাহাড়ের উপর একটি স্ট্র্যাটেজিক শহর উদ্ধার করেছে। যেখান থেকে রাজধানীর উপর নজরদারি চালানো সম্ভব। ফলে চুক্তির বয়ান অনুযায়ী লাভ হলো আজারবাইজানের।

মাঠে চেয়ে বেশি লড়াই চলছে মুখে৷ দুই পক্ষই আশ্রয় নিচ্ছে বাগাড়ম্বরের৷ নিজেদের ছোঁড়া গোলায় সাধারণ মানুষ মারা গেলেও দুই পক্ষই অপর পক্ষকে দুষছে যুদ্ধের নিয়ম না মানার জন্য৷ হামলা নিয়ে দুই পক্ষের পালটা দাবিতে সংকট আরো বাড়ছে৷

চুক্তির পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের বলেছেন, চুক্তি যাতে রক্ষিত হয়, তার দিকে নজর রাখা হবে। কোনো পক্ষই যাতে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখা হবে। বিতর্কিত অঞ্চলে এবং দুই দেশের সীমান্তে রাশিয়ার প্রায় দুই হাজার সেনা মোতায়েন করা হবে। যারা শান্তির জন্য কাজ করবে। শুধু তাই নয়, যুদ্ধবন্দিদের দ্রুত হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে বলেও পুটিন জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। যে সীমান্ত ব্লকেড তৈরি করা হয়েছিল, তা আর থাকবে না।

আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শুধু রাশিয়া নয়, তুরস্কের সেনাও সীমান্তে মোতায়েন করা হবে। তারাও শান্তির পক্ষে কাজ করবে।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী পাশিনইয়ান জানিয়েছেন, চুক্তি মেনে না নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। যুদ্ধ বন্ধের জন্য চুক্তি প্রয়োজন ছিল। তবে এই চুক্তি তাঁকে এবং তার দেশের মানুষকে ব্যথিত করেছে। বস্তুত, চুক্তি সই হওয়ার পরেই আর্মেনিয়ার রাজধানীতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ চুক্তির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।

প্রায় ছয় সপ্তাহ যুদ্ধের পর এই চুক্তি হলো। মাঝে তিনবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছিল দুই দেশের মধ্যে। দুইবার রাশিয়ার মধ্যস্থতায় এবং একবার অ্যামেরিকার হস্তক্ষেপে। কিন্তু তিনবারই চুক্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে তা ভঙ্গ হয়েছে। তবে সোমবারের চুক্তি ভঙ্গ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

দীর্ঘ দিন ধরেই নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। আন্তর্জাতিক ভাবে নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ। কিন্তু সেখানে বসবাস করেন আর্মেনিয়ার জনগোষ্ঠী। আজারি শাসন তাঁরা মানেন না। তারা সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকার তৈরি করেছেন। আর্মেনিয়ার সরকার তাদের সমর্থন করে। নব্বইয়ের দশকেও দুই দেশের মধ্যে নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে যুদ্ধ হয়েছিল। এ বারের যুদ্ধেও স্থায়ী কোনো সমাধান সূত্র মিলল না বলেই কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের বক্তব্য।

সমঝোতা হলো কী নিয়ে
মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হয়েছে শান্তি চুক্তিটি। নতুন চুক্তির আওতায় আজারবাইজানের হাতেই থাকবে নাগোর্নো কারাবাখ। আর্মেনিয়া আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিকটবর্তী আরো কিছু এলাকা থেকে সরে যাবে।

অনলাইনে এক টেলিভিশন ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন রাশিয়ার শান্তিরক্ষীরা ফ্রন্টলাইনে টহল দেবে।

দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে ১ হাজার ৯৬০ জনকে তারা মোতায়েন করবে।

শান্তিরক্ষা প্রক্রিয়ায় তুরস্কও অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহ্যাম আলিয়েফ।

আলিয়েফ অনলাইনে ভাষণের সময় ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ছিলেন।

পুতিন বলেছেন, সমঝোতার আওতায় বন্দী বিনিময়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং একইসাথে সব অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ সংযোগে উন্মুক্ত হবে।

সূত্র : ডয়চে ভেলে ও বিবিসি


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us