ট্রাম্পের কষ্ট বাড়িলে দিলো শেয়ারবাজার!
ট্রাম্পের কষ্ট বাড়িলে দিলো শেয়ারবাজার! - ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরাজয় এখন ‘প্রায় নিশ্চিত’। তিনি নিজে অবশ্য পরাজয় মেনে নিতে এখনো প্রস্তুত নন। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, তিনি কাউকে তার পাশে পাচ্ছেন না। এই দুর্দিনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পাশে নেই ঘনিষ্ঠ মহলও। এদিকে ট্রাম্প ক্রমাগত বলে চলেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। তাকে ঠকানো হয়েছে। অথচ নিক্কি হেইলির মতো হেভিওয়েট রিপাবলিকান নেতারাও মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তারা এখন নিজেদের হিসাব ঠিক রাখার দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।
কিন্তু সেই সময় ওয়াল স্ট্রিটের মুখ ফিরিয়ে থাকাটা আরো বেশি বেদনাদায়ক হয়ে উঠেছে ট্রাম্পের কাছে। বাজার চাঙ্গা রাখতে কত কী করেছেন তিনি! ওয়াল স্ট্রিটের মুখে হাসি ফোটাতে করোনা অতিমারীকে অস্বীকার করে অর্থনীতি চালু রেখেছিলেন, যার মূল্য চোকাতে গিয়ে প্রাণ গেছে লক্ষ লক্ষ মার্কিন নাগরিকের। আর এই ওয়াল স্ট্রিটই ট্রাম্পের ‘সম্ভাব্য’ পরাজয়ে হাসতে হাসতে বলছে, ‘কিছু যায় আসে না। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলেও কোনো সমস্যা নেই।’
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি ক্ষমতায় না ফিরলে ধসে যাবে এই বাজার। অবসর জীবনের সঞ্চয় তলানিতে ঠেকবে।’ সে সব তো দূরের কথা, অক্টোবরের কর্মসংস্থান রিপোর্ট সামনে আসতেই টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে মার্কিন ইক্যুইটি বাজার। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে ভালোই হয় ওয়াল স্ট্রিটের। কর ছাড় মিলবে। বাণিজ্যে কড়াকড়ি থাকবে না। তবে বাইডেন ক্ষমতায় এলেও বিশেষ সমস্যা হবে না, কারণ সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠদের নেতা হিসেবে রয়েই যাচ্ছেন রিপাবলিকান সেনেটর মিচ ম্যাক’কনাল। এতে অবশ্য বড় স্টিমুলাস প্যাকেজ নাও মিলতে পারে। কিন্তু জো–মিচ জুটির একটা বড় ইতিহাস আছে সেই ওবামার আমল থেকে। এতেই বাজার নিশ্চিৎ, বেশি কর চাপবে না এবং বাণিজ্য বিধিও সহজ–সরলই হবে।
তবে বড় ভয় ছিল সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনকে নিয়ে, যিনি বরাবরই আর্থিক লেনদেনে কর আরোপের পক্ষপাতী। যদ্দিন মিচ ম্যাক’কনেল সিনেটে রয়েছেন, তদ্দিন অর্থদপ্তরে ওয়ারেন বা শ্রম দপ্তরে বার্নি স্যান্ডার্স যে বসতে পারবেন না, তা স্পষ্ট। ট্রাম্প প্রথম পছন্দ হলেও বাইডেন আমলে ওয়ালস্ট্রিটের আকাশে যে কালো ছায়া নেমে আসবে না, সে ব্যাপারে পুঁজিপতিরা নিশ্চিত। এছাড়া বাইডেনের প্রথম লক্ষ্য অতিমারী ঠেকানো। যার ওপর নির্ভর করছে দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কত দ্রুত হবে। এমনকি ওয়ালস্ট্রিটের বহু পুঁজিপতি চেয়েছিলেন, ট্রাম্প যাক। কিন্তু তার ‘পলিসি’ থাকুক।
কেউ কেউ বাইডেনের প্রচারে বিশাল অঙ্কের টাকাও ঢেলেছেন। বাইডেনই যে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তা মোটামুটি পাকা। এবার সেনেটেও ক্ষমতার ভারসাম্য দেখে মেঘ না চাইতেই পানি পেয়েছেন তারা, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
সূত্র : আজকাল