সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সমস্যায় ট্রাম্পের জন্য
সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া সমস্যায় ট্রাম্পের জন্য - ছবি সংগৃহীত
এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের যে ধারা দেখা যাচ্ছে, সে অনুযায়ী হোয়াইট হাউসের দখল থাকতে চলেছে ডেমোক্র্যাটদের হাতে। অর্থাৎ রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে আসতে পারেন জো বাইডেন। কিন্তু এত গেল সহজ ভোটের হিসেব। যদিও ট্রাম্প অত সহজেই ময়দান ছেড়ে দেবেন না। ভোটের ফল বাইডেনের পক্ষে যেতেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ‘ভোট কারচুপির’। তাই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করতে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে যেতে চান তিনি একথা সোশাল মিডিয়া সমক্ষেই জানিয়েছেন।
তবে ‘সহজ কথা ঠিক ততটা সহজ নয়’। ঠিক যেমন সহজ নয় এই আইনি আশ্রয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে সুপ্রিম কোর্ট যাওয়া এবং আইনি লড়াইয়ে অসুবিধায় পড়তে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই। ঠিক এমন এক পরিস্থিতি হয়েছিল ২০০০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তবে নির্বাচনে জালিয়াতির ঘটনা আমেরিকায় বিরল। যদিও ট্রাম্প ২০০০ সালের প্রসঙ্গ এনেই জানিয়েছেন এবারের নির্বাচনে সুপ্রিম কোর্টের জড়িত হওয়া উচিত।
যে ঘটনার কথা ডোনাল্ড ট্রাম্প উল্লেখ করেছে তা ঠিক ২০ বছর আগের কথা। প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রার্থী ছিলেন রিপাবলিকান দলের জর্জ ডাব্লিউ বুশ এবং ডেমোক্র্যাট আল গোর। ফ্লোরিডায় ভোট পুনর্গণনার আবেদন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায় এবং বিজয়ী ঘোষণা করা হয় রিপাবলিকান জর্জ বুশকে। ২০০০ সালে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত হতে এক মাসের বেশি সময় লেগে গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ফলাফল চূড়ান্ত হয়। সেই সময় আদালতের লিবারল এবং কনজারভেশনদের মধ্যে ৫-৪ ভোটে জয়লাভ করেন বুশ।
কিন্তু সমস্যা হলো এবারে কনজারভেটিভসদের মধ্যে তিনজনকে ট্রাম্প মনোনীত করলেও ২০ বছর আগের চিত্র আর আজকের নির্বাচনের ছবি অনেকটাইও আলাদা। বুশ শুধুমাত্র ফ্লোরিডাতে পুনর্গণনা বন্ধের জন্য সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিক রাজ্যে তা করতে চাইছেন। এক্ষেত্রে আইনে কী কী বিচারপদ্ধতি থাকতে পারে সেটিও এখনো পরিষ্কার নয়।
নির্বাচনে পিছিয়ে পড়তে শুরু করলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোট কারচুপিকে সামনে আনেন, কিন্তু প্রমাণ ছিল না কোনো। তাই ভোট গণনায় রিপাবলিকান নেতার অভিযোগ প্রভাব ফেলতে পারছে না বরং দেশের মানুষ এই অভিযোগকে প্রত্যাখ্যানই করেছে। ট্রাম্পের কথায়, “আমরা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে যাব। আমরা চাই যে সমস্ত ভোটদান বন্ধ হয়ে যাক। যা ঠিক করার সুপ্রিম কোর্ট করবে।”
আসলে সুপ্রিম কোর্টে যাব বললেই আর যাওয়া যায় না। হোক না তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আইনের নিয়ম সকলের জন্য এক। তাই এক্ষেত্রে ট্রাম্পকেও নিম্ন আদালতে আগে এই মামলা আনতে হবে। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিপক্ষ জো বাইডেনও জানিয়ে দিয়েছেন দরকার পড়লে তিনিও আইনি পথে হাঁটবেন। তবে এখন যা ভোট চিত্র সেখানে তিনি আইনের থেকে ‘রাজনীতি’তেই আস্থা রাখতে চাইছেন।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস